শীতের কারণে সকালে কাজে যাওয়া যায় না
ঠাকুরগাঁওয়ে সকাল পর্যন্ত প্রায় অর্ধেকটা সময় দেখা মেলে না সূর্যের
সীমান্তবর্তী জেলা ঠাকুরগাঁও। হিমালয় পর্বতের কাছাকাছি এই জেলার অবস্থান হওয়ায় এখানে শীতের প্রকোপ সব সময়ই বেশি দেখা যায়। কয়েক দিন ধরে দিনে কিছুটা গরম থাকলে সন্ধ্যার পর থেকেই শুরু হয় গা শিরশিরে বাতাস।
দিনের অর্ধেক বেলাও দেখা মেলে না সূর্যের। রাতভর পড়ছে বৃষ্টির মতো কুয়াশা। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত প্রায় অর্ধেকটা সময় দেখা মিলছে না সূর্যের। শীতার্ত মানুষদের পাশে দাঁড়াতে সরকার ও বিত্তবানদের প্রতি আহব্বান জানিয়েছেন অসহায় মানুষেরা।
বিজ্ঞাপন
আমরা তো গরিব। সরকার তো দিচ্ছেই কম্বল। শুধু তো একটা কম্বল দিয়ে আর হয় না। সরকারের পাশাপাশি যারা সমাজের বিত্তবান রয়েছে, তারা যদি একটু এগিয়ে আসে, তাহলে হয়তো আমাদের মতো অসহায়দের অনেক সুবিধা হবে
বৃহস্পতিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকালে সরজমিনে দেখা যায়, শীত ও কুয়াশার কারণে কাজ করতে অসুবিধা হওয়ায় অনেকটা বিপাকে পড়েছেন এই জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ। শীতে জড়োসড়ো হয়ে গেছে গবাদি পশুও। কেউ কেউ আবার খড়কুটোতে আগুন জ্বালিয়ে করছেন শীত নিবারণের চেষ্টা। শীতের কাপড় পড়ে হাঁটাচলা করছেন প্রায় সবাই।
বিজ্ঞাপন
সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা আহম্মদ আলী বলেন, গত কয়েক দিন ধরেই শীত একটু বেড়েই চলছে। দিনের অনেকটা সময় সূর্যের মুখ দেখা যায় না। অনেক ঠান্ডা পড়ছে।
শহরের মন্দিরপাড়া এলাকায় কথা হয় পথচারী আমেনা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, গতবারের তুলনায় এবারে আমাদের জেলায় অনকে বেশি শীত পড়েছে। গরিব মানুষ, শীত নিবারণের জন্য তেমন কিছু নেই। কষ্টে থাকতে হয়। তবে সরকার থেকে কম্বল যদি দেওয়া হয়, তবে হয়তো কিছুটা শান্তি পাব।
আকচা ইউনিয়নের বাসিন্দা ওমর ফরুক বলেন, ৪-৫ দিন ধরে প্রচুর কুয়াশা। শীতের কারণে সকালে কোনো কাজে যাওয়া যায় না। অসহায় মানুষ আমরা, কাজ না করলে পরিবার চলবে না। তাই শীতে কষ্টে করে যেতে হয় কাজে।
শহরের কালীবাড়ী এলাকায় রিকশাচালক মকবুল হোসেন বলেন, আমরা তো গরিব। সরকার তো দিচ্ছেই কম্বল। শুধু তো একটা কম্বল দিয়ে আর হয় না। সরকারের পাশাপাশি যারা সমাজের বিত্তবান রয়েছে, তারা যদি একটু এগিয়ে আসে, তাহলে হয়তো আমাদের মতো অসহায়দের অনেক সুবিধা হবে।
এখন পর্যন্ত আমরা প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ২৬ হাজার কম্বল পেয়েছি। সেগুলো বিভিন্ন উপজেলায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিবারের মতো এবারো অসহায়দের শীত নিবারণের জন্য শীতবস্ত্র তৈরি করা হয়েছে। তবে আমি আশা করি যারা সমাজের বিত্তবান মানুষ আছেন সমাজের দুস্থ অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়াবেন
জেলা প্রশাসক, ঠাকুরগাঁও
পঞ্চগড় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ ঢাকাপোস্টকে বলেন, যেহেতু ঠাকুরগাঁও জেলাটি পঞ্চগড় জেলার পাশেই অবস্থিত, সে ক্ষেত্রে ঠাকুরগাঁও জেলায় শীতের প্রকোপ বেশি থাকে পঞ্চগড় জেলার মতো। পঞ্চগড়ে বৃহস্পতিবার তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সে অনুযায়ী ঠাকুরগাঁও জেলায় হতে পারে ৯ দশমিক ৮ কিংবা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল পঞ্চগড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কে এম কামরুজ্জামান সেলিম ঢাকাপোস্টকে বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে ২৬ হাজার কম্বল পেয়েছি। সেগুলো বিভিন্ন উপজেলায় পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রতিবারের মতো এবারো অসহায়দের শীত নিবারণের জন্য শীতবস্ত্র তৈরি করা হয়েছে। তবে আমি আশা করি যারা সমাজের বিত্তবান মানুষ আছেন সমাজের দুস্থ অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়াবেন।
এনএ