কুড়িগ্রামে হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র পরিবর্তন করতে যাওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসকের বিরুদ্ধে দরজা বন্ধ করে এক রোগীকে মারধর করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হাসপাতালে গিয়ে ওই চিকিৎসককে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে বিক্ষুব্ধ জনতার হাত থেকে চিকিৎসককে মুক্ত করা হয়। 

জানা গেছে, উপজেলার মন্ডলপাড়া এলাকার মৃত শমছ উদ্দিন মন্ডলের ছেলে মো. জাহাঙ্গীর আলম (৬০) ডায়রিয়ার আক্রান্ত হয়ে গত ২৮ মার্চ চিলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি ব্যবস্থাপত্র হাতে নিয়ে মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদুল হাসানের কাছে গেলে তার সঙ্গে বসে থাকা ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিসহ রোগীর মধ্যে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে চিকিৎসক তার রুমের দরজা বন্ধ করে জাহাঙ্গীরকে মারধর করতে থাকলে তার মাথা ফেটে যায়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতালের পরিবেশ উত্তপ্ত হয়। ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হাসপাতালের ওই চিকিৎসককে অবরুদ্ধ করে রাখে। 

আহত রোগী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ৩ দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি থেকে ডায়ারিয়ার চিকিৎসা নিচ্ছি। আরোগ্য না হওয়ায় চিকিৎসা পরিবর্তনের জন্য ব্যবস্থাপত্র হাতে নিয়ে ডা. মাহমুদুল হাসানের রুমে যাই। সেখানে প্রবেশ করা মাত্রই একটি ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি আমার হাত থেকে কাগজটি কেড়ে নেয়। তিনি কেন কাগজ কেড়ে নিলেন এমন কথা জানতে চাইলে ডা. হাসান ও ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি আরিফ রুমের দরজা বন্ধ করে আমাকে কিল-ঘুষি মারে এবং দেয়ালের সঙ্গে ধাক্কা দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেয়।

এ বিষয়ে মেডিকেল অফিসার ডা. মাহমুদুল হাসান বলেন, ওই রোগী আমার রুমে আসার পর কোনো একটি বিষয় নিয়ে বাকবিতণ্ডা বাধে। এসময় বাইরে থেকে রোগীর অভিভাবকরা ক্ষিপ্ত হওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প.কর্মকর্তা ডা.আমিনুল ইসলাম বলেন, আমি জরুরি মিটিংয়ে ছিলাম। বিষয়টি জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

চিলমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো.রুকুনুজ্জামান শাহীন বলেন, হাসপাতালে বিবাদমান পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। পরবর্তীতে বসে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুর-এ মোর্শেদ বলেন, ডাক্তার ও রোগীর মাঝে একটা ভুল বোঝাবুঝির ঘটনা ঘটেছে। স্থানীয় ভাবে বিষয়টি সমাধানের জন্য আলোচনা হচ্ছে। এছাড়াও আমরা তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করে দিয়েছি। যদি আমাদের চিকিৎসকের অপরাধ থেকে থাকে তাহলে ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

জুয়েল রানা/এমএএস