অপেক্ষার প্রহর গুনছেন শিশু তাইবার বাবা-মা
সিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে তাইবাকে নিয়ে বোরকা পরা এক নারী পালিয়ে যাচ্ছেন
চারদিনেও খোঁজ মেলেনি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চুরি যাওয়া দুই মাসের কন্যাশিশু তাইবার। শিশুকে ফিরে পেতে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন বাবা-মা।
এর আগে, বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চিকিৎসা নিতে আসা সীমা বেগমের কন্যাশিশু চুরি হয়। এ ঘটনায় শিশুর বাবা তফিজ মোল্লা বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় মামলা করেছেন।
বিজ্ঞাপন
সীমা বেগম জানান, বুধবার সকালে তিনি মেয়েকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাম রুবেলার টিকা দিতে নিয়ে যান। হাসপাতালের পুরাতন ভবনের নিচ তলায় বোরকা পড়া অপরিচিত এক নারীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে তাদের মধ্যে আলাপচারিতা চলছিল। এক পর্যায়ে শিশুটিকে আদরের ছলে কোলে নেন ওই নারী। সে সময় তিনি হাসপাতালের বর্হিবিভাগে ঔষুধ নিতে যান। ফিরে এসে তিনি ওই নারী ও তার শিশু সন্তানকে পাননি।
গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোজাহিদুল ইসলাম জানান, বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে সীমা খাতুন তার দুই মাস বয়সী শিশুকন্যা তাইবাকে নিয়ে নিজের সর্দি-কাশির চিকিৎসা করাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যান। ওই সময় বহির্বিভাগে খুব ভিড় ছিল। এ সময় পাশে থাকা বোরখা পড়া এক মেয়ে সীমাকে আপা সম্বোধন করে নানা গল্প করে। এক পর্যায়ে তার কোলে তাইবাকে দিয়ে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে। সরল বিশ্বাসে সীমা তার মেয়েকে ওই অপরিচিত নারীর কোলে দিয়ে ডাক্তার দেখাতে যান।
বিজ্ঞাপন
ডাক্তারের চেম্বার থেকে তিনি বের হয়ে বোরকা পরা ওই নারীকে আর খুঁজে পাননি। ভিড় থাকায় তিনি আহাজারি করে এদিক ওদিক খুঁজতে থাকেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি তিনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান। পুলিশ এসে সিসিটিভি ফুটেজ নিয়ে বিভিন্ন স্থানে চেকপোস্ট বসানোর পাশাপাশি শিশুটিকে উদ্ধারে অভিযান শুরু করে। গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এই প্রথম কোনো শিশু চুরির ঘটনা ঘটেছে।
শিশুর বাবা তফিজ উদ্দীন জানান, তিনি তার মেয়ে তাইবাকে ফিরে পেতে অপেক্ষার প্রহর গুনছেন। শিশুকে ফিরে পেলেই কেবল তার বাড়িতে কান্নার রোল থামবে।
গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান, ভুক্তভোগী সীমা বেগমের মারুফ (১০) ও মাহমুদা (৭) নামে আরও দুই সন্তান রয়েছে। হাসপাতালের সিসিটিভিতে শিশু তাইবাকে নিয়ে পালানো ওই নারীকে দেখা গেলেও পরিচয় নিশ্চিত করা যায় নি। তবে শিশুটিকে উদ্ধারে বিশেষ অভিযান চলছে।
গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তমাল হোসেন বলেন, আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে পুলিশ। দ্রুত শিশুটিকে উদ্ধার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
সিভিল সার্জন ডাক্তার মিজানুর রহমান বলেন, ওই হাসপাতালে এমন ঘটনা এটাই প্রথম। ঘটনার পর হাসপাতাল চত্বরের নিরাপত্তা ও মনিটরিং বাড়ানো হয়েছে। স্বল্প সময়ের মধ্যে শিশুটিকে পুলিশ উদ্ধার করতে পারবে ।
এসপি