ফরিদ আহম্মেদ

ময়মনসিংহে এক তরুণীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করে তা ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে ফরিদ আহম্মেদ জয়ের (২৮) নামে এক যুবকের বিরুদ্ধে। তিনি তারাকান্দা উপজেলা যুবলীগের সদস্য।

মঙ্গলবার (২৩ মার্চ) এ ঘটনায় ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৬নং আমলী আদালতে মামলা করেন ওই তরুণী।

বিষয়টি নিশ্চিত করে মামলার আইনজীবী শাজাহান কবীর সাজু বলেন, ২০১২ সালের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলাটি করেছেন ওই তরুণী। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে তারাকান্দা থানার ওসিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে এফআরআই করার নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ত্রিশাল উপজেলার বিয়ারা আওলিয়ানগর এলাকার এক তরুণীর সঙ্গে মোবাইলে পরিচয় হয় ফরিদের। পরিচয়ের সূত্রে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি রেজিস্ট্রি না করে মুন্সির মাধ্যমে বিয়ে পড়িয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে যান। সেখানে তিনদিন হোটেলে রাত্রিযাপন করে গোপনে মোবাইলে শারীরিক সম্পর্কের ভিডিও ধারণ করেন ফরিদ।

মামলার এজাহারে তরুণী আরও উল্লেখ করেন, ওই ভিডিও আমার মোবাইলে পাঠিয়ে টাকা দাবি করে ইন্টানেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন। পরে ভিডিও ডিলিট করে দেওয়ার শর্তে তাকে ৫০ হাজার টাকা দিই। কিন্তু ভিডিও ডিলিট না করে হুমকি দিতে থাকলে আমি র‌্যাব অফিসে অভিযোগ করি।

বিষয়টি জানতে পেরে ৪ মার্চ ময়মনসিংহ শহরে এসে বিয়ের আশ্বাসে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে আমাকে তারাকান্দা উপজেলার কাশিগঞ্জ বাজারে এক বাসায় নিয়ে যান। সেখানে দুদিন আটকে রেখে তিন বন্ধু মিলে আমাকে দলবেঁধে ধর্ষণ করে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করেন। এ ঘটনায় ১৫ মার্চ তারাকান্দা থানায় অভিযোগ দিতে গেলে ওসি আমাকে আটকে রেখে সাদা কাগজে আমার মায়ের স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেন।

এসব বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ফরিদ আহম্মেদ জয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তার মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুল মান্নান বলেন, ফরিদ আহম্মেদ জয় উপজেলা যুবলীগের সদস্য। তবে তার বিরুদ্ধে এ ধরনের ঘটনা জানা নেই। অভিযোগ প্রমাণিত হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যুবলীগে কোনো অপরাধীর স্থান হবে না।

তারাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগটি সঠিক নয়। তবে ফরিদের বিরুদ্ধে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ নিয়ে ওই নারী থানায় এসেছিল। পরে জানতে পারি ফরিদ তাকে বিয়ে করেছেন। এসব কাগজপত্রও আমার কাছে আছে। তবে অশ্লিল ভিডিও দিয়ে চাঁদা আদায়ের বিষয়টি আমাদের বলা হয়নি। এখন আদালতের কাগজ হাতে পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেব।

উবায়দুল হক/এএম