পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ৫ দিন ধরে অপারেশন বন্ধ

পাঁচ উপজেলার মানুষের চিকিৎসাসেবা গ্রহণের একমাত্র কেন্দ্র পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতাল। হাসপাতালের জুনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মনসুর আলম ছুটিতে থাকায় সব ধরনের অপারেশন বন্ধ রয়েছে। এতে এক সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে অসুস্থ অবস্থায় পড়ে আছেন অপারেশন করতে আসা রোগীরা।

বুধবার (২৪ মার্চ) সন্ধ্যায় পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে গিয়ে অপারেশন করতে আসা রোগী ও তাদের স্বজনদের দুঃখ-দুর্দশা দেখা যায়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সদর হাসপাতালের একমাত্র জুনিয়র কনসালট্যান্ট মনসুর আলমের স্ত্রী অসুস্থ হওয়ায় ২০ মার্চ ঢাকায় যান। ২০ মার্চ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত ছুটির আবেদন জমা দিয়েছেন তিনি। ফলে হাসপাতালে কোনো ধরনের অপারেশন করাতে পারছেন না রোগীরা।

হাসপাতাল সূত্র জানায়, ১০০ শয্যার হাসপাতালে ৩৬ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও জুনিয়র কনসালট্যান্ট অ্যানেস্থেসিয়া (অবেদনবিদ) পদ রয়েছে মাত্র একটি। হাসপাতালে বর্তমানে পদায়ন রয়েছে ১০ জন চিকিৎসক। এ ছাড়া অন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে প্রেষণে কর্মরত আছেন নয়জন এবং করোনা ডেডিকেটেট চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন নয়জন। এর আগে নিয়মিতভাবে হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ৫-৬টি অস্ত্রোপচার হতো।

সদর উপজেলার চাকলারহাট ইউনিয়নের রতনিবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আনারুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার থেকে হার্নিয়ার সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি। চিকিৎসক না থাকায় অপারেশন হচ্ছে না। বড় হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য নেই। তাই অসহ্য যন্ত্রণা নিয়ে এখানে পড়ে আছি। জানি না কবে আমার অপারেশন হবে।

হাফিজাবাদ ইউনিয়নের তালমা এলাকার জেসমিন আক্তার বলেন, আমি কয়েকদিন ধরে অসুস্থ। চিকিৎসক বলছেন পাইলসের অপারেশন করাতে হবে। এজন্য হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। কিন্তু হাসপাতালে অপারেশনের চিকিৎসক নেই। এত বড় হাসপাতালের যদি এমন অবস্থা হয় তাহলে আমরা কোথায় যাব?

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি) ডা. আমির হোসেন বলেন, অপারেশন করার মতো আমাদের অন্যান্য চিকিৎসক রয়েছেন। আমাদের হাসপাতালে মাত্র একজন অবেদনবিদ রয়েছেন। তিনিও ছুটিতে থাকায় রোগীদের অপারেশন করাতে পারছি না। তাই রোগীদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মো. সিরাজউদ্দৌলা পলিন বলেন, ১০০ শয্যার হাসপাতালে মাত্র একজন অবেদনবিদ। এজন্য জটিলতা তৈরি হয়েছে। আমাদের সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একটি অবেদনবিদের পদ দীর্ঘদিন ধরে খালি রয়েছে। সেখানে কাউকে পদায়ন করা হলে এ ধরনের মুহূর্তগুলোতে শূন্যতা পূরণ করতে পারতাম।

রনি মিয়াজী/এএম