গত ১৬ মার্চ রাতে নোয়াগাঁও গ্রামে বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুর করা হয়

সুনামগঞ্জের শাল্লার নোয়াগাঁও গ্রামে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িঘরে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন গ্রেফতার ঝুমন দাস আপনের মা নিভা রানী দাস। বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) শাল্লা থানায় ৭২ জনের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ দেন। 

বিষয়টি নিশ্চিত করে শাল্লা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হক ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

নিভা রানী দাস অভিযোগে উল্লেখ করেন, গত ১৬ মার্চ রাতে ফেসবুকে পোস্টের সূত্র ধরে আমার ছেলে ঝুমনকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সেই রাতে আমি ঘুঙ্গিয়ারগাঁওয়ে আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলাম। পরদিন ১৭ মার্চ সকাল সাড়ে ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত নোয়াগাঁও গ্রামে স্বাধীন মিয়ার নেতৃত্বে ৭২ জন আসামি দেশি অস্ত্রশস্ত্র, রামদা, বল্লম, কিরিচ ইত্যাদি নিয়ে গ্রামে হামলা ও লুটপাট চালায়। আমার বাড়িতে স্বাধীন মিয়া, ফখর উদ্দিন ওরফে ফক্কন আলীসহ আরও অনেকে আমার পুত্রবধূ সুইটি রানী দাশকে টানাহেঁচড়া করে শ্লীলতাহানি ও মারধর করে।

এ সময় আমার পুত্রবধূ বাম হাতের কনুইয়ের ওপর গুরুতর আঘাত পায়। তার গলায় থাকা স্বর্ণের হার ফখর উদ্দিন ছিনিয়ে নিয়ে যায়। স্বাধীন মিয়া আমার ঘরে থাকা ট্রাংকের তালা ভেঙে নগদ ৫৮ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এছাড়াও প্রায় ৮৫টি বাড়িঘর তছনছ করে এবং গ্রামে হামলা ও লুটপাট চালিয়ে প্রায় ৮০-৯০ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন করে। বীর মুক্তিযোদ্ধা জগৎ চন্দ্র দাসের ঘর ভাঙচুর, ঠাকুরবাড়ির কষ্টি পাথরের মূর্তি নিয়ে যায় আসামিরা। যার আনুমানিক মূল্য কয়েক লাখ টাকা। 

নোয়াগাঁও গ্রামে হামলার ঘটনায় এর আগে থানায় তিনটি মামলা হয়েছে। ১৮ মার্চ দুটি ও ২৪ মার্চ একটি মামলা হয়। ১৮ মার্চ করা দুটি মামলার একটির বাদী শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবদুল করিম। অন্য মামলাটি করেন নোয়াগাঁও গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় হবিবপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার। আর ২২ মার্চ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ঝুমন দাস আপনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা করেছেন শাল্লা থানার এসআই আবদুল করিম। ঝুমন দাস বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন। এসব মামলায় পুলিশ এখন পর্যন্ত ৩৪ জনকে গ্রেফতার করেছে।

সাইদুর রহমান আসাদ/আরএআর