ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলা পরিষদের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দলীয় ও ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এতে গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণে অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বৃহস্পতিবার (১ জুন) রাত ৮টার দিকে তারাকান্দা উপজেলা সদর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে তারাকান্দা উপজেলা সদর বাজারে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুজ্জামান সরকারের প্রধান নির্বাচন পরিচালনা কার্যালয়ে নেতাকর্মীরা অবস্থান করছিলেন। রাত ৮টার দিকে তারাকান্দা উত্তর বাজার থেকে উপজেলা সদরে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী  ফজলুল হকের সমর্থকরা একটি মিছিল বের করেন। মিছিলটি বিদ্রোহী প্রার্থীর কার্যালয়ের কাছে যেতেই ককটেল ও গুলির শব্দ শুনতে পান স্থানীয় লোকজন। এ সময় চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় আহতদেরকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুজ্জামান সরকার বলেন, আমার নেতাকর্মীরা কার্যালয়ে অবস্থান করার সময় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর সমর্থনে একটি মিছিল বের হয়। সেই মিছিল থেকে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ককটেল, দেশীয় অস্ত্র ও শুটারগান দিয়ে আমাকে মারার জন্য হামলা করে। এতে অন্তত ১৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। এ ধরনের হামলা হতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে বৃহস্পতিবার বিকেলে প্রশাসনকে বিষয়টি জানালেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

তবে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ফজলুল হক দাবি করেন, তারাকান্দা উত্তর বাজার থেকে নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণ মিছিল বের করলে সেই মিছিলে অতর্কিতভাবে ককটেল বিস্ফোরণ ও গুলিবর্ষণ করে হামলা করে বিদ্রোহী প্রার্থীর লোকজন। এ সময় তার অন্তত পাঁচজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।

এদিকে ঘটনার পরপর ময়মনসিংহ-শেরপুর সড়কের তারাকান্দার মধুপুর বাজার এলাকায় সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করে বিদ্রোহী প্রার্থী নুরুজ্জামানের সর্মথকরা। এতে সড়কের দুই পাশে কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানবাহন আটকা পড়ে। পরে পুলিশ রাত সাড়ে ১০টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করে।

এ বিষয়ে তারাকান্দা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বলেন, সংঘর্ষে পাঁচজন আহত হয়েছে এমন তথ্য আমাদের কাছে আছে।  ককটেল বিস্ফোরণ হয়েছে সত্য কিন্তু গুলির বিষয়টি যাচাই করতে হবে। ঘটনার পর সড়ক অবরোধ করলে পরিস্থিতি শান্ত করে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়।

প্রসঙ্গত, আগামী ১২ জুন তারাকান্দা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এরা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান ফজলুল হক, আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক (বহিষ্কৃত) নুরুজ্জামান সরকার, জাতীয় পার্টির এম এ মাসুদ তালুকদার ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী রফিকুল ইসলাম মণ্ডল। নির্বাচনের দিন ঘনিয়ে আসায় গত কয়েক দিন ধরেই নির্বাচনী এলাকায় উত্তেজনা চলছিল।

উবায়দুল হক/এমজেইউ