বিসিসি নির্বাচন
নৌকাকে হারাতে হাতপাখাকে ৩ কোটি টাকা দেওয়ার অভিযোগ কাউন্সিলরের
বরিশাল সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীকে পরাজিত করতে হাতপাখার প্রার্থীকে ৩ কোটি টাকা দিয়েছেন আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ বলে দাবি করেছেন ২৪নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য শরীফ মো. আনিছুর রহমান। রোববার (৪ জুন) দুপুরে ধান গবেষণা সড়কের নিজ বাড়িতে নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ কথা বলেন তিনি।
আনিছুর রহমান বলেন, দুই বছর ধরে সাদিক আব্দুল্লাহর বিরুদ্ধে আমরা নির্বাচিত ১০ কাউন্সিলর লড়াই করেছি। নগর ভবনে আমরা যাই না। ১৪ মে রাতে আমাদের মুঠোফোনে অচেনা নম্বর দিয়ে কল করে হুমকি দেওয়া হয় সাদিক আব্দুল্লাহ মনোনয়ন পেলে ১৫ তারিখ আমাদের পা ভেঙে রাস্তায় ফেলে রাখা হবে। আমরা নির্বাচন করতাম না, নির্বাচন করতেছি খোকন সেরনিয়াবাতের অনুরোধে। তিনি বলেছেন, তোমরা ১০ জন নির্বাচন না করলে আমি কাকে নিয়ে চলবো সিটিতে।
বিজ্ঞাপন
আনিছুর রহমান আরও বলেন, ঢাকা বসে হাতপাখাকে ৩ কোটি টাকা দিয়েছেন এবং আমরা যে ১০ জন কাউন্সিলর রয়েছি তার প্রতিটি ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বী তিনজন করে প্রার্থী দিয়েছেন—তাদের নির্বাচনী খরচ ৩০ লাখ টাকা ইতোমধ্যে পেমেন্ট হয়ে গেছে। এসব করেছেন যাকে আমরা রাজনৈতিক অভিভাবক বলি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ও সাদিক আব্দুল্লাহ।
মহানগর আওয়ামী লীগের এই সদস্য বলেন, আমি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর পকেটের লোক ছিলাম। তবে ওই ইতিহাস বলতে রাজি না। বরিশাল সিটি নির্বাচনে নৌকা যেন না হতে পারে সেজন্য হাতপাখার বর্তমান প্রার্থীকে নামিয়েছেন। আমাদের অভিভাবক (আবুল হাসানাত) বিএনপি নেতা এবায়দুল হক চাঁনের কাছেও গিয়েছিলেন ৫কোটি টাকা নিয়ে। চাঁন ভাই না বলেছেন। নৌকার প্রার্থী যেন না জয়ী হতে পারেন এজন্য সাদিক আব্দুল্লাহর লোকজন কাজ করছেন বলেও দাবি করেন আনিছুর রহমান।
২৪ নম্বর ওয়ার্ডের আরেক কাউন্সিলর প্রার্থী ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাফিন মাহমুদ তারিক খানের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করতে গিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে কাউন্সিলর প্রার্থী শরীফ আনিছুর রহমানের বিরুদ্ধেও নিজের নির্বাচনী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কাউন্সিলর প্রার্থী সাফিন মাহমুদ তারিক খান।
কাউন্সিলর শরীফ মো. আনিছুর রহমানের বক্তব্যের বিষয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও নৌকা প্রতিকের নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট আফজালুল করিম বলেন, তিনি কাউন্সিলর প্রার্থী। তিনি যা বলেছেন তা নিজের দায়িত্বে বলেছেন। এ সম্পর্কে নৌকার নির্বাচনী পরিচালনা কমিটির কোন বক্তব্য নেই।
মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গাজী নঈমুল হোসেন লিটু বলেন, কাউন্সিলর শরীফ মো. আনিছুর রহমান মহানগর আওয়ামী সদস্য। আমি মনে করছি তার মস্তিষ্ক বিকৃত হয়েছে। সারাজীবন যে মানুষটির আশ্রয়ে থেকেছেন তাকে নিয়ে এমন অসংলগ্ন কথা প্রমাণ করে আসলে তিনি নিজেকে জাহির করতে এসব বলছেন। নির্বাচনের পরে এমন বক্তব্যের জন্য তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, নৌকা প্রতিকের নির্বাচনী টিম লিডারকে নিয়ে অসাংগঠনিক কোনো কথা বলে থাকলে অবশ্যই তার (শরীফ মো. আনিছুর রহমান) বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/এবিএস