আহত ইউপি চেয়ারম্যান এসএম এনামুল হক

খুলনার পাইকগাছার সোলাদানা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এসএম এনামুল হকসহ তিনজনকে কুপিয়ে জখম করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ সময় আরও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। 

শনিবার (২৭ মার্চ) সকালে সোলাদানা ইউনিয়নের বেতবুনিয়া গ্রামে পোস্টার লাগানোকে কেন্দ্র করে নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যানপ্রার্থীর নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ঘরবাড়ি ও অসংখ্য মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে নিতে বাধা দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে। তবে পুলিশ প্রহরায় গুরুতর আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

এদিকে হাসপাতালে আহতদের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে দুই সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করে মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।    
 
স্থানীয়রা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যানপ্রার্থী বিএনপি নেতা এসএম এনামুল হকের পোস্টার লাগাতে গেলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা তাতে বাধা দেন। এ সময় পোস্টার কেড়ে নিয়ে ছিঁড়ে ফেললে বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান এনামুলকে জানানো হয়। তিনি তার কয়েকজন কর্মী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও তার সমর্থকরা তাদের ধাওয়া করেন। তাদের ধাওয়ায় সোলাদানার বেতবুনিয়া গ্রামের লাভলু গাজী ও তার বোন মনিরার বাড়িতে আশ্রয় নেন চেয়ারম্যানসহ তার লোকজন। 

নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল মান্নান গাজী, রবি গাজী, আবু সাইদ কালাইয়ের নেতৃত্বে তিন শতাধিক লোকজন লাভলু ও মনিরার বাড়িঘর ভাঙচুর করে চেয়ারম্যান এনামুল, কিশোর কুমার মন্ডল, মুজিবুর রহমানকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে।

হামলায় আহত শামীম ও মুজিবরসহ বেশ কয়েকজন জানান, হামলা ঠেকাতে চেয়ারম্যান এনামুলের কর্মী-সমর্থকরা এগিয়ে আসলে তাদেরকেও কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করা হয়। চেয়ারম্যান এনামুল হক, শামীম ও কিশোরের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেছেন। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। ওই এলাকায় এখন থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

এদিকে আহতদের পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পথে বাধা দেওয়া হয়। তবে পুলিশ প্রহরায় তাদেরকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় জয়যাত্রা টেলিভিশনের উপজেলা প্রতিনিধি আসাদুল ইসলাম আসাদ ও দৃষ্টিপাত পত্রিকার পাইকগাছা প্রতিনিধি ফসিয়ার রহমান হাসপাতালে আহতদের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে তাদেরকে লাঞ্ছিত করে মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। 

তবে সোলানাদানা ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মান্নান গাজী দাবি করেছেন, চেয়ারম্যান গালিগালাজ করায় স্থানীয়রা তাকে চারদিক থেকে ঘিরে মারপিট করেছে।

এ বিষয়ে পাইকগাছা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এজাজ শফী জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছে। এ ঘটনায় স্থানীয় হাফিজুর রহমান, রফিক ও অহেদ আলীকে আটক করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

মোহাম্মদ মিলন/আরএআর