মেঝেতে রেখেই চলছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা

ভোলায় গত কয়েক দিনে বেড়েছে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। তাদের মধ্যে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। প্রতিদিন ভোলা সদর হাসপাতালে ১৫ থেকে ২০টি শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হচ্ছে।

স্বাস্থ্য বিভাগ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, ভোলায় আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে গরমের প্রকোপ বেড়ে গেছে। এতে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বৃষ্টি হলে তাপ কমবে। তখন আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসবে।

এদিকে ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়ায় হাসপাতালে রোগীদের চাপ বেশি হচ্ছে। তাই বেশির ভাগ রোগীকে মেঝেতে চিকিৎসা নিতে দেখা যাচ্ছে।

শনিবার (২৭ মার্চ) সরেজমিনে ভোলা সদর হাসপাতালে দেখা যায়, ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের ভিড় লেগে আছে। মেঝেতে সেলাইন হাতে নিয়ে বসে আছেন বাবা-মা, কোলে শুয়ে আছে তাদের শিশু। আবার অনেক বাবা-মা বেড না পেয়ে শিশুদের কোলে নিয়ে ছুটছেন এদিক-সেদিক।

ভোলা সদর হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিনই সদর হাসপাতালে গড়ে ৩৫ থেকে ৪০ জন রোগী ভর্তি হচ্ছে। তাদের মধ্যে শিশু, পুরুষ, নারী ও মধ্যবয়স্করাও আছেন। তবে শিশুর সংখ্যাই বেশি। হঠাৎ ডায়রিয়া প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতালের চিকিৎসক-নার্সরা। শয্যা কম থাকায় রোগীদের মেঝেতে থেকে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে।

তামজিদ (৫) নামের এক শিশু রোগীর বাবা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ২৬ মার্চ দুপুর থেকে আমার বাচ্চার ডায়রিয়া ও বমি দেখা দেয়। তার খাবার খাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। ২৭ মার্চ সকালে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে এসেছি। এখন তার চিকিৎসা চলছে।

ডায়রিয়ায় আক্রান্ত শিশুর পাশে স্বজনরা

ডায়রিয়া রোগী নাজমা আক্তার জানান, তিনি ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ইলিশা জংশন থেকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসছেন। সিট না পেয়ে মেঝেতে থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। কষ্ট হলেও নার্সদের সেবায় সন্তুষ্ট তিনি।

রোগী মো. জিয়া উদ্দিন বলেন, ডায়রিয়ার চাপে ঠিকমতো বসতে পারছেন না তিনি। বারবার বাথরুমে যেতে হচ্ছে।  রোগীর চাপ বেশি থাকায় বাথরুমে জায়গা না পাওয়ায় খুব কষ্টে আছেন।

ভোলা হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নাসরিন আক্তার বলেন, ডায়রিয়া রোগীদের চাপ বেশি থাকায় আমাদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এখানে ডায়রিয়ার ১০টি বেডে বর্তমানে রোগী আছেন ৫০ জন। তবু আমরা রোগীদের যথাসাধ্য চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি।

এ বিষয়ে ভোলার সিভিল সার্জন ডা. সৈয়দ রেজাউল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পর্যাপ্ত ওষুধ-স্যালাইল সরবরাহ রাখা আছে। হঠাৎ গরমের কারণে ডায়রিয়া প্রকোপ বেড়েছে। তবে শিশুরাই বেশি ভর্তি হচ্ছে। অধিকাংশ শিশুর বয়স ১ মাস থেকে ৫-৭ বছর। এই প্রকোপ তেমন বেশি নয়। এখন নিয়ন্ত্রণে আছে।

জায়গাস্বল্পতায় মেঝেতে অনেকেই বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, রোগীদের চাপ বেড়ে গেলেও তাদের ঠিকমতো চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া ভোলা জেলার সাতটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শতাধিক ডায়রিয়া রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে বলে জানান তিনি।

রাকিব উদ্দিন অমি/এনএ