৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে ছাত্রদলের কমিটিতে ছাত্রলীগ-বিবাহিতরা!
রূপগঞ্জে ছাত্রদল নেতাদের সংবাদ সম্মেলন
৩০ লাখ টাকার বিনিময়ে বিবাহিত ও ছাত্রলীগ নেতাদের দিয়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠনের অভিযোগ উঠেছে।
২২ বছর পর গত শুক্রবার রাতে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি ও সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সজীব ২১ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা ছাত্রদলের কমিটি ঘোষণা করেন।
বিজ্ঞাপন
কমিটিতে সুলতান মাহমুদকে আহ্বায়ক ও মাসুদুর রহমানকে সদস্যসচিব করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে আরিফ বিল্লাহকে; যিনি ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্রলীগের সহসম্পাদক। ২৭ মার্চ গঠিত ২১ সদেস্যের আহ্বায়ক কমিটির ১৪ জনই কমিটির বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
দলীয় সূত্র জানায়, সুলতান মাহমুদ ২০১৮ সালে উপজেলার দাউদপুর ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি জামান মিয়ার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌসি জেরিনকে বিয়ে করেন। কমিটিতে আরিফ বিল্লাহকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে। তিনি এলাকায় ছাত্রলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত। ২০১৮ সালে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ছিলেন আলিফ। আলিফের হাতে অনেক বিএনপির নেতাকর্মী লাঞ্ছিত হয়েছেন। অথচ তাকেই ছাত্রদলের পদ দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
রূপগঞ্জ ছাত্রদলের ত্যাগী নেতারা জানান, এসব বিষয় কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের নেতারা অবগত থাকলেও টাকার বিনিময়ে কমিটি দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি সুলতান মাহমুদ দাউদপুরের একটি জমি বিক্রি করেন ৩০ লাখ টাকা। ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন শ্যামল ও জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সজীব আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে কমিটি চূড়ান্ত করেছেন। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের দফতরে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত আসবে বলে আমরা আশা করি।
তবে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হাসান শ্যামল বলেন, উপজেলা বা থানা কমিটি অনুমোদন দেওয়ার এখতিয়ার জেলা কমিটির। তারা কমিটি করে নিয়ে আসে। আমরা তাদের গাইড করি কীভাবে কমিটি করতে হবে। অছাত্র কিংবা সন্ত্রাসী অথবা অন্য দলের কেউ কমিটিতে স্থান যেন না পান। রূপগঞ্জে এমনটি হয়ে থাকলে তার দায় জেলা নেতাদের নিতে হবে।
অর্থের বিনিময়ে কমিটি দেওয়া হয়েছে এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে শ্যামল বলেন, যদি বিবাহিত ও ছাত্রলীগের কাউকে দিয়ে কমিটি গঠন হয়ে থাকে এবং প্রমাণ পাওয়া যায়; তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেব। তবে এখন পর্যন্ত আমি লিখিত অভিযোগ পাইনি।
জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের ঢাকা বিভাগীর সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মশিউর রহমান রনি বলেন, আহ্বায়ক যে বিবাহিত সেটি আমরা জানি, কেন্দ্রও জানে। যেহেতু কেন্দ্র থেকে কমিটি দেওয়া হয়েছে সেহেতু এ ব্যাপারে আমার কোনো মন্তব্য নেই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক খাইরুল ইসলাম সজীব বলেন, এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাই না।
রাজু আহমেদ/এএম