মেয়র আবদুল কাদের মির্জা

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, আমরা আমাদের কোম্পানীগঞ্জকে ভালোবাসি। এই কোম্পানীগঞ্জে জননেত্রী শেখ হাসিনা অনেক উন্নয়ন করেছেন। আজকে কোম্পানীগঞ্জে রাস্তা-ঘাট, পোল-কালভার্ট, স্কুল-কলেজ, মাদরাসা-মক্তব, মসজিদ-মন্দিরসহ এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। আগামী তিন বছর যদি আমার নেত্রী ক্ষমতায় থাকে তাহলে এই এলাকায় আর কোনো কাজ বাকি থাকবে না।

বৃহস্পতিবার (০১ এপ্রিল) বিকেল ৫টার দিকে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পূর্ব চর কাঁকড়া যুব সংস্থা ক্রিকেট লিগের ফাইনাল খেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেন, আজকে কোম্পানীগঞ্জের মানুষ বিপদগ্রস্ত। এই অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করতে হবে। আল্লাহ মাঝে মধ্যে মানুষকে পরীক্ষা করার জন্য এই ধরনের সমস্যা দেন। আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন ঘটলে এলাকায় শান্তি ফিরে আসবে।

তিনি আরও বলেন, সকল রাজনৈতিক দল সুন্দরভাবে এলাকাতে বসবাস করবে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করবে। কারও সঙ্গে কেউ মারামারি-হানাহানি, গণ্ডগোল-বিশৃঙ্খলা করবে না। যার সংগঠন সে করবে। অসুবিধা কোথায়? মওদুদ সাহেব মারা গেছেন আমি তিনদিনের শোক পালন করেছি না? এতে কি আমার দলের ইজ্জত নষ্ট হয়েছে? আমাকে শোকসভা করতে দেওয়া হয় নাই। যারা করতে দেয় নাই তাদের সম্মানহানি হয়েছে। আমার সম্মানহানি হয় নাই। যারা করতে দেয় নাই তারা এটার খেসারত দেবে। 

কাদের মির্জা বলেন, আমাদেরকে পরমতসহিষ্ণু রাজনীতি করতে হবে। অতীতের ভুলত্রুটি সবার আছে, আমাদেরও আছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে বিএনপি-জামায়াত এলাকা ছাড়া। বিএনপি-জামায়াত  ক্ষমতায় আসলে  আওয়ামী লীগ এলাকা ছাড়া। মামলা-হামলার শিকার। এটা কি রাজনীতি? এটার পরিবর্তন হওয়ার দরকার।

যত অস্ত্রবাজি, যত গুলি করা হোক না কেন আবদুল কাদের মির্জা তার সত্য বচন থেকে কখনো ফিরে আসবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন

এদিকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ফেসবুক লাইভে এসে ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্য দিয়েছেন মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। এ সময় তিনি বলেন, আমি আওয়ামী লীগ থেকে পদত্যাগ করেছি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ও গবেষণা পরিষদ’ নামে জাতীয়ভাবে একটা প্রতিষ্ঠান আছে, আমি সেই প্রতিষ্ঠানের সদস্য হিসেবে আছি। এই প্রতিষ্ঠানের সদস্য হিসেবে আমি
 রাজনীতি করবো। আমি নামাজে বসে শপথ করেছি সাহস করে সত্য কথা বলবো। অন্যায়, অবিচার ও জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করবো। আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে এগিয়ে যাব। আমি জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নের পক্ষে কথা বলবো। আজকে আমি আমার প্রতিশ্রুতি থেকে এক চুল পরিমাণ সরে যায়নি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অনুসারী হয়ে আমি বেঁচে থাকতে চাই।

হেফাজতে ইসলাম সম্পর্কে কাদের মির্জা বলেন, জাসদের সভাপতি খিজির হায়াত খান, সাধারণ সম্পাদক নুর নবী ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রুমেল চৌধুরী মিলে কোম্পানীগঞ্জের হেফাজতকে উস্কে দিচ্ছে। আমি হেফাজতকে কোম্পানীগঞ্জে মিছিল সমাবেশ কিছুই করতে দেই নাই। বাংলাদেশের সব জায়গায় যদি এভাবে পদক্ষেপ নেওয়া হয় এবং আওয়ামী লীগ যদি কঠিন সিদ্ধান্ত নেয় তাহলে হেফাজত কোনোভাবে রাস্তায় নামতে পারবে না। এ সময় তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি অনুরোধ করে বলেন, হেফাজতে ইসলামের লাগাম টেনে ধরুন।

তিনি আরও  বলেন, একটি অপ্রিয় সত্য কথা বলতে চাই। সেই কথাটি হচ্ছে- বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে দুর্বৃত্তায়ন চলছে, অপরাজনীতিবিদদের নিয়ন্ত্রণে যাচ্ছে, এজন্য আজকে রাস্তায় মানুষ বলাবলি করছে ওবায়দুল কাদের সাহেব নাকি মেরুদণ্ডহীন প্রাণী। আর নোয়াখালীর মানুষ আজকে বলাবলি করছে নোয়াখালীর রাজনীতির এই দুরাবস্থা এবং একরাম চৌধুরীর অপকর্মের জন্য মেরুদণ্ডহীন এইচ এম খাইরুন আনম চৌধুরী সেলিম (জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি)  দায়ী। কোম্পানীগঞ্জের রাজনীতির এ অবস্থার জন্য দায়ী আরেক মেরুদণ্ডহীন শাহাবুদ্দিন (কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান)। 

হাসিব আল আমিন/আরএআর