নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চাঁদপুরে বরফ তৈরি
ইলমা শাহরিন বরফকল
সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও চাঁদপুরের অভয়াশ্রমে ভ্রাম্যমাণ আড়ৎগুলোতে নদীপথে বরফ আসতে দেখা গেছে। তবে চাঁদপুরে ২টি বরফকলে চাষকৃত মাছ সংরক্ষণ করার জন্য বরফ উৎপাদনে ১ মাস করে অনুমোদন দিয়েছে জেলা মৎস্য অধিদফতর।
কিন্তু অনুমোদনপ্রাপ্ত ইলমা বরফকল বলছে, নদীপথে তারা কোনো বরফ দিচ্ছে না। তাহলে জাটকা সংরক্ষণে ভ্রাম্যমাণ আড়ৎগুলোতে এত বরফ আসছে কোথায় থেকে? এমনটাই বলছে মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে ও খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চাঁদপুরের দক্ষিণাঞ্চলের পুরানবাজার রনাঘোয়াল থেকে হরিনা ফেরিঘাট পর্যন্ত গভীর রাতে ও ভোরে ট্রলার ও স্পিডবোট যোগে বরফ আসতে দেখা গেছে।
এছাড়া চাঁদপুর মাছঘাট থেকে পিকআপযোগে আসা বরফ পুনরায় নদীপথে ট্রলারযোগে জাটকা সংরক্ষণের জন্য যাচ্ছে। প্রতিদিন দাউদকান্দি, মুক্তারপুর, নারায়ণগঞ্জ থেকে স্পিডবোট যোগে চাঁদপুরের বিভিন্ন স্থানে বরফ পৌঁছানো হয়। আর প্রতিটি স্পিডবোট ১২ থেকে ১৪টি বরফ আনা হয়।
বিজ্ঞাপন
এছাড়া ভোরে ও রাতে চাঁদপুর থেকে স্পিডবোটে জাটকা পাচার করা হয়। তবে চাষকৃত মাছ সংরক্ষণ করার জন্য অভয়াশ্রমে ২টি বরফকল খোলা থাকে। দুটির মধ্যে একটি ১ মাস করে খোলা রাখা হয়। চাঁদপুর জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভা ও জেলা টাস্কফোর্সের সভায় স্পিডবোট বন্ধের কথা বলা হলেও তা বন্ধ করা হচ্ছে না।
এদিকে জেলা মৎস্য অধিদফতর ইলমা বরফকল থেকে জাটকা বিক্রেতারা বরফ কিনছে এমন অভিযোগ পাওয়া গেছে। নদীপথে কোনো বরফ বিক্রি করে না বলে জানায় ইলমা শাহরিন অ্যান্ড কোং কর্তৃপক্ষ।
ইলমা শাহরিন অ্যান্ড কোং পরিচালক রফিক উল্ল্যা বলেন, প্রশাসনের নির্দেশনা অনুযায়ী বরফ বিক্রি করে থাকি। তবে এই বরফকল নদীতে কোনো বরফ বিক্রি করে না। পূর্বে প্রতিটি বরফ ১৫০ টাকা বিক্রি হলেও বর্তমানে ২০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। পূর্বে ৬০০ থেকে ৭০০ বরফ বিক্রয় হতো। বর্তমানে ২০০ থেকে ২৫০ বরফ প্রতিদিন বিক্রি হয়। তবে মাওয়া ঘাটের স্পিডবোটগুলো এখন চাঁদপুরে সচরাচর চলাচল করে।
স্পিডবোটগুলো বন্ধ না করলে প্রশাসনের জাটকা সংরক্ষণের অভিযান ভেস্তে যাবে। এদিকে চাঁদপুর শহরের বড় স্টেশন মাছঘাটে প্রতিদিন চাষকৃত মাছ সংরক্ষণে শত শত বরফ আসে। অভিযোগ আছে, মাছঘাট থেকে অটো ও ট্রলারযোগে জাটকা আড়ৎদাররা বরফ কিনে নিচ্ছেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদুল বাকী জানান, জেলা টাস্কফোর্সের সভায় স্পিডবোট বন্ধে নৌ-ফাঁড়িকে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নদীপথে বরফ যাচ্ছে কি না এটা তদারকি করবে কোস্টগার্ড ও নৌ-ফাঁড়ি। তবে আমরা নির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
তিনি আরও জানান, চাষকৃত মাছ সংরক্ষণে চাঁদপুরের ২টি কলে বরফ উৎপাদনে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তবে শর্ত রয়েছে তারা নদীপথে কোনো বরফ বিক্রি করতে পারবে না।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আবদুল্লা আল মাহমুদ জামানের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, আমি ছুটিতে আছি। এই বিষয়ে এখন কিছু বলা যাচ্ছে না।
শরীফুল ইসলাম/এমএসআর