বন্ধুর বাবার জানাজায় যাচ্ছিল। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তবে চিকিৎসক জানিয়েছেন, ডান পায়ের গোড়ালি উল্টে যাওয়াসহ হাড়ে তিনটি ভাঙা রয়েছে। এতে দ্রুত অস্ত্রোপচার না করা গেলে পা কেটে ফেলতে হতে পারে। কিন্তু টাকার অভাবে পা হারালে মেধাবী শিক্ষার্থী আরিফের ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে যাবে।

সমাজের বিত্তবানসহ সবার একটু সহযোগিতায় আবারও নিজের দাঁড়াতে পারবে আরিফ। তাই তার পা রক্ষা করতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিতে সবার কাছে আকুতি জানিয়েছে তার হতদরিদ্র পরিবার।

আরিফ লক্ষ্মীপুর সরকারি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী। সে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের মিয়ারবেড়ি এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা শাহজাহান কামাল সড়কের সিরির বাপের বাড়ির কৃষক মো. সিরাজের ছেলে। তারা পাঁচ বোন ও দুই ভাই। বোনরা বিবাহিত। তার বড় ভাই মো. শাহিন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে কোনোরকম সংসার চালান।

পরিবার সূত্র জানায়, গত ৫ মার্চ কমলনগর উপজেলার চর লরেঞ্চ গ্রামে বন্ধু রাসেদের বাবার জানাজায় অংশ নেওয়ার উদ্দেশ্যে আরিফ ঘর থেকে বের হয়। সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালকের সঙ্গে সামনের ডান পাশে আরিফ বসা ছিল। তার ডান পা বাইরে ছিল। পথিমধ্যে করইতলা বাজারে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি দ্রুতগতির মোটরসাইকেলের সঙ্গে অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। এতে আরিফের ডান পা গুরুতর জখম হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে আরিফ রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

হাসপাতালের চিকিৎসক অর্থোপেডিক সার্জেন্ট এ কে এম নিজাম উল ইসলামের বরাত দিয়ে পরিবারের লোকজন জানান, আরিফের ডান পায়ের হাড় তিন স্থানে ভেঙে গেছে। এর মধ্যে তার পায়ের গোড়ালি উল্টে গেছে। তাই দ্রুত অস্ত্রোপচার করা না হলে পা কেটে ফেলার আশঙ্কা রয়েছে।

আরিফের বোন বিবি কুসুম ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার ভাইয়ের অপারেশন করতে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা লাগবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। এর বাইরে ওষুধ খরচ ও হাসপাতালের পৃথক খরচ রয়েছে। কিন্তু আমার কৃষক বাবা ও রিকশাচালক ভাইয়ের পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা সম্ভব নয়। আমার কলেজপড়ুয়া ভাইয়ের অপারেশন করার জন্য বিত্তবানসহ সমাজের সবার সহযোগিতা চাই।

ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মানিক মিয়া জানান, ঘটনাটি তিনি শোনেননি। তবে খোঁজ নিয়ে পরিষদ থেকে সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছেন।

ভবানীগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সচিব নুরুল হুদা বলেন, বিষয়টি আমাদের কেউ জানায়নি। তবে এ ব্যাপারে চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলোচনা করে সহযোগিতার চেষ্টা করব।

লক্ষ্মীপুর জেলা সমাজসেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক নুরুল ইসলাম পাটওয়ারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ক্ষেত্রে নিয়ম অনুযায়ী আমার সহযোগিতা করতে পারি। যদি ওই কলেজছাত্রকে সরকারি কোনো হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করানো হয়, তাহলে আমরা অবশ্যই সহযোগিতা করব।

অভাব-অনটনের সংসারে কৃষক বাবার পক্ষে আরিফের অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা করা একেবারেই অসম্ভব। তার অস্ত্রোপচারের জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে সহযোগিতা চেয়ে আকুতি জানানো হয়েছে।

আর্থিক সহযোগিতার জন্য ০১৮২৪০২৬৮৯৩ (বিকাশ ও নগদ ব্যক্তিগত) এবং ইসলামী ব্যাংক এজেন্ট ব্যাংক শাখার হিসাব নাম বিবি কুসুম, হিসাব নম্বর: ২০৫০৭৭৭০২২৪০১৫৩০৫ (তোরাবগঞ্জ এজেন্ট ব্যাংক শাখা)-এ সাহায্য পাঠাতে পারবেন।

এনএ