আ.লীগ নেতার শেষকৃত্যে এগিয়ে গেলেন মুসলিমরা
মানিক মজুমদার
সনাতন ধর্মালম্বীর কেউ মারা গেলে সৎকার কিংবা শেষকৃত্যে সবার আগে তারাই এগিয়ে আসবেন- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু ব্যতিক্রম ঘটেছে নরসিংদীর মনোহরদীতে। রোববার (১১ এপ্রিল) রাতে মনোহরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মানিক মজুমদারের শেষকৃত্যে হিন্দু বা সনাতনদের চেয়ে মুসলিমদের উপস্থিতি ছিল অনেক বেশি।
মানিক মজুমদারের গ্রামের বাড়ি মনোহরদীর গোতাশিয়া ইউনিয়নের আকানগর গ্রামে। তিনি প্রায় ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।
বিজ্ঞাপন
পরিবারের লোকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মানিক মজুমদার দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, শ্বাসকষ্টসহ নানা জটিলতায় ভুগছিলেন। এর মধ্যে গত সপ্তাহে একটি মন্দিরে মিটিংয়ের সময় মাথা ঘুরে পড়ে যান। তারপর এলাকাতেই স্থানীয় ডাক্তারের সহায়তায় একটু সুস্থ হন। সর্বশেষ শনিবার দুপুরে উপজেলা সদরে গেলে তার বুকে ব্যথা শুরু হয়। ব্যথা বাড়াতে পরিবারের সদস্যরা তাকে জরুরি ভিত্তিতে উত্তরার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে রোববার সকাল পর্যন্ত তিনি তিনবার স্ট্রোক করেন। পরে রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
তবে তিনি করোনা আক্রান্ত ছিলেন না। তার করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে বলে পরিবারের পক্ষ থেকে ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেন তার ভাতিজা স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সুব্রত মজুমদার তুহিন। তবে গ্রামে লাশ নিয়ে গেলে সনাতন ধর্মের অনেকেই এগিয়ে আসেনি বলে পরিবারের অভিযোগ।
বিজ্ঞাপন
মানিক মজুমদারের ভাতিজা স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সুব্রত মজুমদার তুহিন অভিযোগের সুরে বলেন, আসলে শিক্ষিত মানুষরাও যদি গুজবে কান দেয় তাহলে কষ্ট লাগে। আমাদের অনেক কাছের মানুষ এগিয়ে আসেনি। সৎকারের সময় ৪ ভাগের ৩ ভাগ ছিল মুসলিম আর একভাগ হিন্দু।
গ্রাম অঞ্চলে গুজব বেশি ছড়ায়। করোনায় মারা গেছেন এই গুজবের কারণেই বেশ কিছু হিন্দু সম্প্রদায়ের লোক এগিয়ে আসেনি। অথচ আমাদের লাশ সৎকারে হিন্দুদের সবার আগে এগিয়ে আসার কথা ছিল। ধর্মের ভেদাভেদ ভুলে মুসলিমরা এগিয়ে এসেছে, এটা ইতিবাচক।
রাকিবুল ইসলাম/এসপি