সাংবাদিক নঈম নিজাম

তিনটি উপজেলা নিয়ে কুমিল্লা-১০ আসন গঠিত। সদর দক্ষিণ, লালমাই এবং নাঙ্গলকোট এ তিনটি উপজেলার সমন্বয়ে গঠিত সংসদীয় আসনটিতে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের একক আধিপত্য থাকলেও এবার এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন কিনেছেন সাংবাদিক নঈম নিজাম। 

বুধবার (২২ নভেম্বর) রাতে নঈম নিজাম ঢাকা পোস্টকে মনোনয়ন কেনা এবং জমা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত রোববার (১৯ নভেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন এবং পরদিন সোমবার তা জমা দেন দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক নঈম নিজাম। তিনি নাঙ্গলকোট উপজেলার জোড্ডা ইউনিয়নের গোহারুয়া গ্রামের বাসিন্দা। 

কুমিল্লা -১০ আসনে ১৯৭৩ সালে আওয়ামী লীগের অধ্যক্ষ আবুল কালাম মজুমদার, ১৯৭৯ সালে বিএনপির সৈয়দ হাবিবুল হক, ১৯৮৬ সালে আওয়ামী লীগের অধ্যক্ষ আবুল কালাম মজুমদার, ১৯৯১ সালে জাতীয় পার্টির মনিরুল হক চৌধুরী, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, ২০০১ সালে বিএনপির মনিরুল হক চৌধুরী এবং ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালে আওয়ামী লীগের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। 

বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (বার্ড), কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, কোটবাড়ি ময়নামতি জাদুঘর, শালবন বিহার, প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনসহ বহু ঐতিহাসিক ও গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সব রয়েছে এই সংসদীয় আসনে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে  কুমিল্লা-১০ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী মোট সাতজন। তাদের মধ্যে অর্থমন্ত্রী অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল, সাংবাদিক নঈম নিজাম, নাঙ্গলকোটের উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শাহজাহান মজুমদার, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা মনজুরুল ইসলাম ভূইয়া রাফি উল্লেখযোগ্য।

সাংবাদিক নঈম নিজামের মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়ে নাঙ্গলকোট উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল আলম পাটোয়ারী ঢাকা পোস্টকে বলেন, অর্থমন্ত্রী মহোদয় অসুস্থতার কারণে দীর্ঘদিন এলাকায় যেতে পারেন না। তিনটি উপজেলার লাখ লাখ মানুষ বঞ্চিত। এসব বঞ্চিত মানুষের জন্য আমরা সবাই মিলে নঈম নিজাম ভাইকে অনুরোধ করেছি। আমাদের অনুরোধে তিনি মনোনয়ন কিনেছেন। তিনি এমপি হয়ে আসলে আমাদের অবহেলিত মানুষগুলো উপকৃত হবে। আমরা বিশ্বাস করি তৃণমূল আওয়ামী লীগের সবাইকে এক কাতারে আনতে পারবেন নঈম ভাই।

এ বিষয়ে সাংবাদিক নঈম নিজাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এলাকার মানুষের চাপে মনোনয়ন কিনেছি। আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা চান এমপি হয়ে অবহেলিত মানুষগুলোর পাশে দাঁড়াই।

জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য মতে, কুমিল্লা-১০ আসনে মোট ভোটার ৭ লাখ ৩৪ হাজার ৫২৯ জন। তার মধ্যে সদর দক্ষিণ উপজেলায় ২ লাখ ১২ হাজার ৬৬ জন, লালমাই উপজেলায় ১ লাখ ৭১ হাজার ২৫০ জন এবং নাঙ্গলকোট উপজেলায় ৩ লাখ ৫১ হাজার ২১৩ জন ভোটার রয়েছেন। এ আসনে মোট ভোটারের মধ্যে পুরুষ ভোটার ৩ লাখ ৮০ হাজার ৭৬৯ জন এবং নারী ভোটার ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৭৫৫ জন। এছাড়াও ট্রান্সজেন্ডার ( তৃতীয় লিঙ্গের) ভোটার আছেন ৫ জন। আসনটির সদর দক্ষিণ উপজেলায় ৭টি ইউনিয়ন, লালমাই উপজেলার ৯টি  ইউনিয়ন এবং নাঙ্গলকোটের একটি পৌরসভা ও ১৬টি ইউনিয়ন রয়েছে। 

নির্বাচন কমিশন ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, নির্বাচনে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ৩০ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ১ থেকে ৪ ডিসেম্বর, মনোনয়ন আপিল ও নিষ্পত্তি ৬ থেকে ১৫ ডিসেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ১৭ ডিসেম্বর, প্রতীক বরাদ্দ ১৮ ডিসেম্বর, নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চলবে ১৮ ডিসেম্বর থেকে ৫ জানুয়ারি সকাল ৮টা পর্যন্ত। ভোটগ্রহণ হবে ৭ জানুয়ারি সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

আরিফ আজগর/আরএআর