প্রেম করে বিয়ে, ৩ বছরেই লাশ হলেন গৃহবধূ
প্রতীকী ছবি
কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে মৌসুমী খাতুন (২৪) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার পর ফাঁস লাগিয়ে ঝুলিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের কামারপাড়ায় এ ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী রবিউল ইসলাম পলাতক রয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
নিহত মৌসুমী খাতুন কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বেরকালুয়া গ্রামের মোমিন আলীর মেয়ে। স্বামী রবিউল ইসলাম একই উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের শাহজাহানের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩ বছর আগে মৌসুমীর সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করে রবিউল ইসলাম। তাদের তিন মাস বয়সী একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। রবিউলের বিরুদ্ধে মাদক সেবনসহ বহু অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে। মৌসুমীর সঙ্গে বিয়ের আগে আরও দুটি বিয়ে করেছিল রবিউল। বিয়ের পর মৌসুমীর অনুমতি ছাড়াই গোপনে আরও দুটি বিয়ে করেন রবিউল।
বিজ্ঞাপন
এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিবাদ সৃষ্টি হয়। পারিবারিকভাবে বিষয়টির সমাধান হয়েছে কয়েকবার। কিন্তু কোনো পরিবর্তন হয় নি রবিউল। এরই জের ধরে বুধবার দুপুরের দিকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে আবারও ঝগড়া শুরু হয়। এ সময় মৌসুমীকে মারধর করেন রবিউল। পরে রাতে তাদের ঘরে ফাঁসিতে ঝুলন্ত অবস্থায় মৌসুমীর মরদেহ দেখতে পান প্রতিবেশীরা। খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহতের ভাই মেহেদী হাসান জানান, হত্যার পর মৌসুমীর মরদেহ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছেন তার স্বামী রবিউল। এ ঘটনায় বাদী হয়ে থানায় মামলা করা হয়েছে। রবিউল মাদক সেবনসহ বহু অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। সে আমার বোনের সঙ্গে বিয়ের আগে এবং পরে আরও চারটি বিয়ে করে। রবিউলের বিচার চাই।
মেহেদী হাসান আরও বলেন, বিয়ের পর থেকে আমার বোনকে কারণে-অকারণে নির্যাতন করতেন রবিউল। এ নিয়ে বহুবার মীমাংসা করা হয়েছে। কিন্তু রবিউলের অত্যাচার বন্ধ হয় না। বুধবার দুপুরে বোনকে বেদম মারপিট করেন রবিউল। তারপর তাকে মেরে ফাঁসিতে ঝুঁলিয়ে দেন।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত রিপোর্ট আসার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।
তিনি আরও বলেন, মারপিটের পর হত্যা করে ঝুঁলিয়ে রাখার অভিযোগে থানায় একটি হত্যা মামলা করেছে নিহতের বড় ভাই মেহেদী। ওই নারীর মৃত্যুর পর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। এ কারণে কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। তদন্ত চলছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এসপি