জাকাতের অর্থে দরিদ্রদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যতিক্রম এ সংগঠনটি প্রতি বছর কিছু হতদরিদ্র পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেয়
‘বাউনবাইরার কতা’। আঞ্চলিকতাকে ধারণ করে চলা ফেসবুকভিত্তিক একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যতিক্রম এ সংগঠনটি প্রতি বছর কিছু হতদরিদ্র পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নেয়। কাউকে দোকান, কাউকে রিকশা আবার কাউকে সেলাই মেশিন অথবা ব্যবসার পুঁজি দিয়ে সহায়তা করে বাউনবাইরার কতা। সংগঠনের সদস্যদের দেওয়া জাকাতের অর্থেই প্রতি বছর রোজার মাসজুড়ে চলে এই স্বাবলম্বী প্রকল্প।
এ বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন এলাকার ২৫টি হতদরিদ্র পরিবারকে স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নিয়েছে বাউনবাইরার কতা সংগঠনের সদস্যরা। এর অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের মো. শান্ত নামে এক তরুণকে ফেরি করে ফল বিক্রির জন্য একটি ভ্যানগাড়ি ও পুঁজি হিসেবে নগদ ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
শান্ত জেলা সদরের কাজীপাড়া শাহপাড়া এলাকার মৃত আব্দুর রহিম সরকারের ছেলে। দুই ভাইবোনের মধ্যে শান্তই বড়। তাই বাবা মারা যাওয়ার পর সংসারের দায়িত্ব পড়ে শান্তর কাঁধে। পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করার পর টাকার অভাবে পড়াশোনায় আর এগোতে পারেননি। নিজের বাড়ি না থাকায় মা-বোনকে নিয়ে বর্তমানে সাহপাড়ায় একটি ভাড়া বাসায় থাকেন শান্ত।
বাসা ভাড়া আর সংসারের খরচ জোগাতে মাসিক সাড়ে ৪ হাজার টাকা বেতনে কাপড়ের দোকানে চাকরি নেন শান্ত। কিন্ত এই অল্প বেতন নুন আনতে পান্তা ফুরায়। সেজন্য কাপড়ের দোকান ছেড়ে ফলের দোকানে কাজ নেন। দৈনিক হাজিরায় যে টাকা পান, তাতেও সংসার চলছিল না তার।
বিজ্ঞাপন
শান্ত ও তার পরিবারের দুর্দশা দেখে পাশে দাঁড়ায় বাউনবাইরার কতা সংগঠন। শান্তকে ব্যবসা করার জন্য ভ্যানগাড়ি ও পুঁজি হিসেবে নগদ অর্থ সহায়তা দেয় সংগঠনটি। শান্ত ও তার মায়ের কাছে ভ্যানগাড়ি এবং নগদ অর্থ তুলে দেওয়ার সময় জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন শোভন, বাউনবাইরার কতা সংগঠনের সমন্বয়ক ডা. মাহবুবুর রহমান এমিল, অ্যাডমিন মো. আরিফুল ইসলাম, আমিরুল সরকার, মুজিবুর রহমান, আরিফুল ইসলাম মোল্লা ও গোলাম কায়সার কিবরিয়া ভূঁইয়া উপস্থিত ছিলেন।
বাউনবাইরার কতা সংগঠনের সমন্বয়ক ডা. মাহবুবুর রহমান এমিল বলেন, চার বছর ধরে আমরা সংগঠনের সদস্যদের জাকাতের অর্থে স্বাবলম্বী প্রকল্প বাস্তবায়ন করছি। এক্ষেত্রে আমরা বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে হতদরিদ্রদের খুঁজে বের করে, তাদের স্বাবলম্বী করার উদ্যোগ নিই। এবারও ২৫টি পরিবারকে স্বাবলম্বী করা হবে।
আজিজুল সঞ্চয়/এএম