ডিলারের নিয়ন্ত্রণে টিসিবির পণ্যের কালোবাজারি
ডিলার মোস্তাক আহমেদ কাজলের মুদি দোকানে টিসিবির পণ্য
রাজশাহী নগরীতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) পণ্যের কালোবাজারির নিয়ন্ত্রণ করছিলেন খোদ সংস্থাটির একজন ডিলার। বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে নগরীর রেশমপট্টি এলাকায় মোস্তাক আহমেদ কাজলের বাড়িতে হানা দেয় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। অভিযান চলে তার দোকানেও।
সব মিলিয়ে এই ডিলারের কাছে থেকে জব্দ করা হয় ১ হাজার ৫২০ লিটার সয়াবিন তেল, ৩৫০ কেজি চিনি, ৩০০ কেজি মসুর ডাল ও ২০০ কেজি ছোলা। এই ঘটনায় শাস্তির কবলে পড়তে যাচ্ছেন এই ডিলার।
বিজ্ঞাপন
‘আলী ট্রেডার্স’ নামে মোস্তাক আহমেদ কাজল টিসিবির ডিলারশিপ নিয়েছেন। এই ডিলারের মাধ্যমে নগরীতে ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি করে টিসিবি। এর পাশাপাশি বাড়ির পাশে মেসার্স কাজল ব্রাদার্স নামে একটি মুদি দোকানও রয়েছে তার। সেটিও চালান কাজল। সেই দোকানেও টিসিবির পণ্যের মজুদ পেয়েছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।
অভিযোগ রয়েছে, প্রতিদিনের বরাদ্দ পাওয়া টিসিবির অবিক্রিত পণ্য অবৈধভাবে মজুদ করছিলেন এই ডিলার। কিছু পণ্য খোলা বাজারে বিক্রি না করেও মজুদ করছিলেন তিনি। এর বাইরে বিভিন্ন টিসিবির ডিলারের কাছে থেকেও পণ্য কিনে মজুদ করছিলেন তিনি। পরে মজুদকৃত পণ্য দোকানে চড়া দামে বিক্রি করেন।
বিজ্ঞাপন
ওই অভিযানে নেতৃত্ব দেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাসান-আল-মারুফ। তিনি জানান, মুলত ওই ডিলার টিসিবির ট্রাকে করে পণ্য বিক্রি করতেন। প্রতিদিনের বরাদ্দ থেকে কিছু পণ্য মজুদ করতেন তিনি। বিধি অনুযায়ী, এমনটি ঘটলে টিসিবিকে জানানোর বিধান রয়েছে। কিন্তু সেটিও করেননি এই ডিলার।
হাসান-আল-মারুফ জানান, তাছাড়া নিজের আলাদা দোকানে তিনি টিসিবির পণ্য বিক্রি করতেন। অন্য টিসিবির ডিলারদের পণ্য কিনে নিয়েও বিক্রি করতেন তিনি। এক কথায় একটি সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণ করতেন এই ডিলার।
তিনি আরও বলেন, ভোক্তা অধিকার আইনে তাকে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হতে পারে। তাছাড়া নিয়মিত মামলাও হতে পারে। তবে তাকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে। ছুটির দিন বাদে আগামী যেকোনো দিন তিনি এর ব্যাখ্যা দেবেন। তারপরই ওই ডিলারের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে টিসিবির রাজশাহীর আঞ্চলিক কার্যালয়ের প্রধান রবিউল মোর্শেদ জানান, আট দিনে আগেও মোস্তাক আহমেদ কাজলের আলী ট্রেডার্সকে ট্রাক সেলের জন্য সব মালামাল দেওয়া হয়েছে। এর আগেও তিনি ট্রাক সেলের পণ্য তুলেছেনে। খোলাবাজারে নিয়মিত পণ্য বিক্রি করলে তার বাড়িতে পণ্যের মজুদ হওয়ার কথা না। তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবে টিসিবি।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএসআর