গৃহহীনদের মাঝে ঘর বরাদ্দের অনিয়ম তুলে ধরায় স্থানীয় এক সাংবাদিককে মারধর

নাটোরের সিংড়ায় গৃহহীনদের মাঝে ঘর বরাদ্দের গণশুনানিতে ইউপি চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন আকন্দের স্বজনপ্রীতির অনিয়ম তুলে ধরায় স্থানীয় এক সাংবাদিককে মারধর করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সামিউল ইসলামের কাছে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী সাংবাদিক খলিলুর রহমান। খলিলুর রহমান দৈনিক বাংলাদেশ সমাচারের সিংড়া উপজেলা প্রতিনিধি। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন সাংবাদিকরা। 

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মুজিব শতবর্ষে গৃহহীনদের ঘর দেওয়ার জন্য সিংড়া উপজেলার ১১ নম্বর ছাতারদিঘি ইউনিয়নের ৬০ ভূমিহীনের তালিকা জমা দেন ইউপি চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন আকন্দ। স্থানীয় এমপি ও আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশে বুধবার (২৮ এপ্রিল) বেলা ১১টায় ছাতারদিঘি ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে ভূমিহীনদের বরাদ্দকৃত ঘরের তালিকার বিষয়ে গণশুনানি করেন সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এমএম সামিউল ইসলাম। গণশুনানিতে উপস্থিত স্থানীয় সাংবাদিক খলিলুর রহমান ঘর বরাদ্দে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তোলেন। 

অভিযোগে তিনি বলেন, পাওটা গ্রামের সাবিনার বাড়ি থাকলেও তাকে আবার ঘর দেওয়া হচ্ছে। আব্দুর গফুরের বাড়ি ইউনিয়নে না হওয়ার পরও ঘর দেওয়া হচ্ছে। পরে ঘর দুটি বাতিল করে দেন ইউএনও। ক্ষিপ্ত হয়ে শুনানি শেষে পাওটা বাজারে ওই সাংবাদিককে প্রকাশ্যে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন আকন্দ। 

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে সাংবাদিক খলিলুর রহমান পেশাগত কাজে আসছিলেন। এ সময় একডালা বাজারে চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত কার্যালয়ের সামনে তার পথরোধ করে চেয়ারম্যানের মোটরসাইকেলচালক মিন্টু প্রামাণিক। তখন চেয়ারম্যানের সামনে তাকে মারধর করা হয়।

সাংবাদিক মো. খলিলুর রহমান বলেন, গণশুনাণিতে অনিয়মের প্রতিবাদ করায় চেয়ারম্যান আলতাব হোসেনের নির্দেশে আমাকে অন্যায়ভাবে মারধর করেছেন তার মোটরসাইকেলচালক মো. মিন্টু প্রামাণিক, শাহিন মাস্টার ও মো. ধলু। আমি চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি।

অভিযুক্ত মো. শাহিন মাস্টারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মারধরের বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ঘর বরাদ্দে অর্থ নেওয়া হয়েছে এমন প্রচার করায় তার সঙ্গে রাগারাগি হয়েছে। মারামারি হয়নি।

চেয়ারম্যান আলতাব হোসেন আকন্দ বলেন, আমি তো তাকে মারপিট করতে দেখিনি। ওই ছেলে মাদকে আসক্ত। তার অপকর্ম নিয়ে সালিস করেছি। শুনানিতে তার বোনের ঘর বরাদ্দের বিষয়ে বিরোধিতা করলে তাকে বকা দেওয়া হয়েছে।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এম এম সামিরুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখব।

তাপস কুমার/এএম