ময়মনসিংহে বাস-অটোরিকশার সংঘর্ষে সাতজন নিহত

বিয়ের পাঁচ বছর পর প্রথম সন্তানের মুখ দেখলেন। এই খুশিতে আত্মহারা বাবা-মা। পরিবারের নতুন অতিথিকে দেখার জন্য চাচা-চাচি, ফুফা-ফুফু ও আত্মীয়স্বজনের মনেও বেজায় আনন্দ। দেখতে যাওয়ার জন্য সবার মন অস্থির। ছুটে যান হাসপাতালে। সেখান থেকে নতুন অতিথিকে নিয়ে বাড়ি ফিরছেন সবাই।

কে জানত এ আনন্দ বিষাদে রূপ নেবে! পাঁচ বছরের সাধনা শেষ হয়ে যাবে এক মুহূর্তে! একসঙ্গে নিভে যাবে সাতজনের প্রাণ! এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় সব আনন্দ মুছে পরিবারে নামে ঘোর অমানিশা।

ময়মনসিংহের তারাকান্দা উপজেলায় বাস ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ব্যক্তিদের ঘটনা এটি। নিহত সাতজনের ছয়জন একই পরিবারের।

নিহতরা হলেন- মাওলানা ফারুক আহমেদ (৩০), তার স্ত্রী মাসুমা আক্তার (২২), তাদের তিনদিন বয়সী শিশুপুত্র, ফারুকের বড় ভাই নিজাম উদ্দিন (৪০), স্ত্রী জোসনা বেগম (৩৫) ও নিজামের বোন জুলেখা বেগম (২২)। তাদের বাড়ি নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের ফেচুয়ালেঞ্জি গ্রামে। নিহত আরেকজন অটোরিকশার চালক রাকিবুল হাসান সোহাগ (২৯)।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন। রোববার (০৩ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে উপজেলার কাশিগঞ্জ গাছতলা বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শ্যামগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নয়ন দাস।

তিনি বলেন, নেত্রকোনা থেকে ঢাকাগামী শাহজালাল পরিবহনের বাসের সঙ্গে নেত্রকোনাগামী সিএনজি অটোরিকশার সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই এক নবজাতক ও তিন নারীসহ সাত অটোরিকশাযাত্রী প্রাণ হারান। মরদেহগুলো উদ্ধার করে শ্যামগঞ্জ হাইওয়ে ফাঁড়িতে রাখা হয়েছে। 

নিহত ফারুকের ভাতিজা মাসুম বলেন, তিনদিন আগে চাচার এক ছেলেসন্তান হয়েছে। গত তিনদিন হাসপাতালে ছিলেন তারা। তাদের আনতে চাচা-চাচি ও ফুফু হাসপাতালে যান।

সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে তারা নেত্রকোনায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে সড়ক দুর্ঘটনায় সব শেষ হয়ে গেল আমাদের।

এএম