একই কলেজের একই ব্যাচের শিক্ষার্থী সাগর ও বীথি। কলেজে প্রথম পরিচয়েই তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এরপর ভালোলাগা থেকে ভালোবাসার সম্পর্ক। সেই ভালোবাসার সম্পর্কে পাকাপোক্ত করতে হাতির পিঠে চড়ে প্রিয়তমাকে বিয়ে ঘরে তুলেছেন সাগর। ভালোবাসার এই বিয়েকে স্মরণীয় করে রাখতেই প্রেমিক-প্রেমিকা হাতিতে চড়ে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। 

রোববার (১৬ মে) আট কিলোমিটার হাতিতে চড়ে বিয়ে করতে বর আসেন সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাকড়শোন গ্রামে। এ সময় এলাকার উৎসুক জনতা এক নজর বর-কনেকে দেখতে বিয়ে বাড়িতে ভিড় জমায়। রীতিমতো বিয়ের আসর পরিপূর্ণ হয়ে যায় হাজারো জনতায়। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, তাড়াশ উপজেলার ধামাইচ গ্রামের জুব্বার মণ্ডলের ছেলে সাগর মণ্ডল (২৪) ও মাকড়শোন গ্রামের মো. তোজাম্মেল প্রামাণিকের মেয়ে তানজিলা আকতার বীথি (২৪) পার্শ্ববর্তী নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার শহীদ শামসুজ্জোহা অনার্স কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। কলেজে পড়া অবস্থায় তাদের মধ্যে প্রথম পরিচয়েই বন্ধুত্ব হয়। এরপর তাদের মধ্যে গড়ে ওঠে ভালোবাসার সম্পর্ক। ভালোবাসার সম্পর্ককে স্মরণীয় করে রাখতে তারা সিদ্ধান্ত নেন হাতিতে চড়ে বিয়ে করার। পারিবারিকভাবেই সিদ্ধান্ত হয় তাদের বিয়ের।

তারিখ অনুযায়ী বর সাগর মণ্ডল রোববার (১৬) মে দুপুর দুইটায় তাড়াশ উপজেলার ধামাইচ এলাকা থেকে হাতিতে চড়ে বিয়ে করতে আসেন আট কিলোমিটার দূরে মাকড়শোন গ্রামের কনে তানজিলা আকতার বীথির বাড়িতে। সেখানে দুই লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে সম্পন্ন হয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা। এদিকে হাতিতে বিয়ে হচ্ছে জেনে এক নজর বর-কনেকে দেখতে বিয়ে বাড়িতে ভিড় জমায় হাজারো মানুষ। 

বিয়ে প্রসঙ্গে বর সাগর মণ্ডল বলেন, কলেজে বীথির সঙ্গে প্রথম পরিচয় হয়। এরপর বন্ধুত্ব থেকে ভালোলাগা ও প্রেম নিবেদন। আর কলেজ জীবনের প্রেমকে স্মরণীয় করে রাখতেই পারিবারিকভাবেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হাতিতে চড়ে বিয়ে করার। 

তিনি আরও বলেন, বিয়েকে স্মরণীয় করতে একেকজন একেকভাবে বিয়ে করেন। কেউ হেলিকপ্টারে, কেউ মাইক্রো-কারে চড়ে বিয়ে করেন। সেখানে তো আমাদের এটি একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস।

সগুনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল্লাহেল বাকী ঢাকা পোস্টকে বলেন, হাতিতে চড়ে বিয়ের আয়োজন সত্যি ব্যতিক্রমী। এই ধরনের বিয়ে আজকাল চোখেই পড়ে না। তবে বিয়ে বাড়িতে বর-কনেকে দেখতে প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে উৎসুক লোকজন ভিড় জমায়। এ নিয়ে গ্রামবাসীর মধ্যেও আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেখা যায়।

শুভ কুমার ঘোষ/আরএআর