কনস্টেবল আলী আহমেদকে সম্মানের সঙ্গে বিদায় দেওয়া হয়

এমন বিদায় আমাকে গর্বিত করেছে। যা আমার জন্য অনেক সম্মানের। সুসজ্জিত গাড়িতে সম্মানের সঙ্গে বাড়ি পৌঁছে দিয়েছে, এটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ পাওয়া। চাকরি জীবনে তেমন চাওয়া-পাওয়া ছিল না। এমন বিদায় চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত পুলিশ সুপার স্যারের এই অভিনন্দন মনে রাখব।

আবেগাপ্লুত কণ্ঠে কথাগুলো বলেছেন খুলনায় অবসরে যাওয়া পুলিশ কনস্টেবল আলী আহমেদ। ১৯৬২ সালের ১৯ মে বাগেরহাটের মোল্লাহাটে তার জন্ম।  

আলী আহমেদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, দেশ ও মানুষের সেবার মানসিকতা নিয়ে ১৯৮১ সালের ২৬ মে পুলিশে যোগ দিই। সিলেট থেকে শুরু করে চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, সাতক্ষীরা ও খুলনায় কাজ করেছি। কর্মজীবনে মানুষের নানা উপকার করেছি। আমার বাবার একটি কথায় মনে রেখে সবসময় কাজ করেছি, ‌‘পরের গাছের ফল, পরের বাড়ির জল খাওয়া যাবে না।’ পরের ফ্রি জিনিস নেওয়া যাবে না। বাবার ওই কথা মনে রেখেই সৎপথে কর্মজীবন শেষ করতে পেরেছি। 

সহকর্মী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাটানো সময়ের বর্ণনা দিয়ে আলী আহমেদ বলেন, বিদায়কালে কষ্ট পেয়েছি, প্রিয় কর্মস্থল ও সহকর্মীদের ছেড়ে যেতে হবে ভেবে। সবার সঙ্গে মিলেমিশে ছিলাম, আনন্দের মধ্যেই ছিলাম। এখন একটু একা লাগছে। তবু তাদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রাখার চেষ্টা করব।

কনস্টেবল আলী আহমেদ

অবসর সময় কীভাবে কাটাবেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, প্রথমত আমার হজ করার ইচ্ছা আছে। বাবার রেখে যাওয়া মসজিদ ও মাদরাসা দেখাশোনা করব। মানুষের সেবা করব। ধর্মীয় ধ্যান-জ্ঞানে মগ্ন থাকব।

খুলনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) এএনএম ওয়াসিম ফিরোজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান যোগদানের পর অবসরে যাওয়া সহকর্মীদের জন্য সুসজ্জিত গাড়িতে বিদায় দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। গত আড়াই মাসে ১১ জনকে সম্মানজনকভাবে বিদায় দেওয়া হয়েছে। বুধবার কনস্টেবল আলী আহমেদকে সম্মানের সঙ্গে বিদায় দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, একজন পুলিশ সদস্য যেন খুশি মনে অবসরে যেতে পারেন এবং আমরা এক পরিবারের সদস্য তা বোঝানোর জন্য পুলিশ সুপার এমন ব্যবস্থা নিয়েছেন।

পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, একজন ব্যক্তি আমাদের সঙ্গে এতদিন কাজ করেছেন, তার যাওয়ার দিনটা সুন্দর হোক। আজীবন একটা সুখস্মৃতি নিয়ে তিনি থাকুক এটাই আমাদের চাওয়া। যে গাড়িতে করে তিনি দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছেন; ওই গাড়িগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো একটি গাড়িতে করে তাকে বাড়িতে নামিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। যিনি যে ইউনিটে কাজ করবেন, সে ইউনিট প্রধান তাকে বাড়িতে নামিয়ে দিয়ে আসবেন। এ কার্যক্রম আমরা চালু করেছি। যতদিন কাজ করব, এ কার্যক্রম চালু থাকবে।

মোহাম্মদ মিলন/এএম