স্বর্ণের মূর্তি দেওয়ার কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়া দুই প্রতারককে গ্রেফতার করেছে রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরপিএমপি)। তাদের কাছ থেকে একটি পিতলের মূর্তি উদ্ধার করা হয়েছে। প্রতারক চক্রটি পিতলের মূর্তিটিকে স্বপ্নে পাওয়া স্বর্ণের মূর্তি দাবি করে চার লাখ টাকায় বিক্রির ফাঁদ পেতেছিল। 

সোমবার (২৪ মে) দুপুরে আরপিএমপির গোয়েন্দা বিভাগের সেন্ট্রাল রোডস্থ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মলেনে এ তথ্য জানান আরপিএমপির উপকমিশনার (গোয়েন্দা) কাজী মুত্তাকি ইবনু মিনান।  

তিনি বলেন, রংপুরের পীরগাছা উপজেলার দেউতি গিলাপাড়া এলাকার আলু ব্যবসায়ী মাসুদ রানার কাছে স্বপ্নে পাওয়া একটি স্বর্ণের মূর্তি বিক্রির কথা বলে অভিনব কায়দায় দুই লাখ ৬০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয় প্রতারক চক্র। এ ঘটনায় মাসুদ রানা থানায় অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করে।

পরে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের সক্রিয় সদস্য রংপুর নগরীর কামালকাছনা এলাকার আবু সাঈদের ছেলে রুবেল মিয়া (৩০) ও কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার চর বেরুবারি এলাকার রহমত আলীর ছেলে মিরাজুল ইসলামকে (২৮) গ্রেফতার করা হয়।

কাজী মুত্তাকি ইবনু জানান, কামাল কাছনা চিড়ার মিল এলাকার গ্রিলের দোকানি রুবেল মিয়াকে তার পূর্বপরিচিত রাজমিস্ত্রি মিরাজুল ইসলাম বলেন বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় মনসুর ফকিরের খালার কাছে স্বপ্নে পাওয়া একটি স্বর্ণের মূর্তি রয়েছে। মূর্তিটি অনেক মূল্যবান ও বিরল। ভালো গ্রাহক পেলে চার লাখ টাকায় মূর্তিটি বিক্রি হবে। বিষয়টি রুবেল তার বন্ধু আবুল হোসেন ওরফে খুশু ও সুজন মিয়ার সঙ্গে আলোচনা করেন এবং তাদের মাধ্যমে মাসুদ রানা বিষয়টি অবগত হন।

গ্রেফতার দুই আসামি 

গত ২৮ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে নগরীর মাহিগঞ্জের আমতলা মোড় এলাকায় বগুড়া থেকে মনসুর ফকির আসেন। তিনি স্বপ্নে পাওয়া মূর্তিটি মাসুদ রানাকে দেখানোর সময় কৌশলে মূর্তির এক টুকরো অংশ ভেঙে হাতে দেন। সেটি স্বর্ণের মূর্তি কিনা তা পরীক্ষা করতে বলেন। এরপর মাসুদ রানা স্বর্ণের দোকান নিয়ে গিয়ে ওই অংশটি পরীক্ষা করে মূর্তিটি স্বর্ণের বলে নিশ্চিত হয়ে সেটি কেনার জন্য মনসুর ফকিরকে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা দেন। কিন্তু মনসুর ফকির টাকা নিয়ে মূর্তিটি না দিয়ে কৌশলে পালিয়ে যান।

এ ঘটনায় মাসুদ রানা আরপিএমপির মাহিগঞ্জ থানায় মামলা করলে গত ২২ মে রাতে গোয়েন্দা বিভাগের একটি চৌকস দল অভিযান চালিয়ে রুবেল মিয়া ও মিরাজুল ইসলামকে মূর্তিসহ গ্রেফতার করে। প্রতারণার সঙ্গে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আরপিএমপির সিনিয়র সহকারী কমিশনার (গোয়েন্দা বিভাগ) ফারুক আহমেদ, কোতোয়ালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রশীদ, পরিদর্শক ছালেহ্ আহাম্মদ পাঠান, এসআই বাবুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। 

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর