মায়ের মৃত্যুর এক ঘণ্টা পর নবজাতকের মৃত্যু
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে এক ঘন্টার ব্যবধানে করোনা আক্রান্ত মা ফারজানা আক্তার (২৭) ও তার সদ্য জন্ম নেওয়া নবজাতকের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। সোমবার (৩১ মে) ভোরে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, গত ১৭ মে কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার আদ্রা ইউনিয়নের হরিশাপুর গ্রামের সোহেল পাটোয়ারীর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী ফারজানা আক্তার করোনা আক্রান্ত হয়ে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে ভর্তি হন। অবস্থার অবনতি হওয়ায় ১০ দিন ধরে হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
বিজ্ঞাপন
রোববার (৩০ মে) রাতে তিনি এক ফুটফুটে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। সোমবার (৩১ মে) ভোর ৫টার দিকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় মারা যান ফারজানা। এর এক ঘণ্টা পর সকাল ৬টার দিকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ওয়ার্ডে মারা যায় সদ্য জন্ম নেওয়া সন্তান। মা ও নবজাতকের মৃত্যুতে পরিবার, হাসপাতালের চিকিৎসকদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. মহিউদ্দিন জানান, করোনায় আক্রান্ত ফারজানা আক্তারের অবস্থা আগে থেকেই খারাপ ছিল। যার কারণে আমরা তাকে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা করছিলাম। কিন্তু সোমবার ভোর ৫টার দিকে মারা যান তিনি। মায়ের মৃত্যুর এক ঘণ্টা পর সকাল ৬টার দিকে নবজাতক ওয়ার্ডে মারা যায় তার সন্তানটি। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও ফেসবুকে লেখা হচ্ছে, শিশুর মৃত্যুর খবর শুনে করোনা আক্রান্ত মায়ের মৃত্যু হয়েছে। বিষয়টি সত্য নয়, আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে ছিল ফারজানা, তিনি মারা যাওয়ার এক ঘন্টা পর শিশুটি মারা যায়।
বিজ্ঞাপন
শিশুটির মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ডা. আসিফ ইকবাল জানান, জন্মের পর নবজাতকটির ওজন ছিল মাত্র সাড়ে ৭শ গ্রাম। মাত্র ২৪ সপ্তাহে হওয়ায় নবজাতকটি ‘অপরিণত’ ছিল। কিন্তু আমাদের শত চেষ্টার পরও নবজাতকটি মারা যায়।
করোনায় মৃতদের দাফনের সংগঠন বিবেক টিমের প্রতিষ্ঠাতা ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, করোনাকালীন এমন হৃদয়বিদারক অনেক মৃত্যুর সাক্ষী হয়েছি। তার মধ্যে মা ও শিশুর মৃত্যু আমাদের কাঁদিয়েছে। মৃত্যুর খবরে হাসপাতালে এসে বিবেকের নারী সদস্যরা ওই নারীর গোসল সম্পন্ন করেন। সকাল সাড়ে ৮টায় হাসপাতাল প্রাঙ্গণে জানাজা শেষে মরদেহ গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়। দুপুরে ওই মা ও তার সন্তানকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
অমিত মজুমদার/এসপি