যশোরের বেনাপোলে তিনটি প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকা ভারতফেরত বাংলাদেশিদের মধ্যে ছয়জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। গত ১৮ মে এসব যাত্রীরা ভারত থেকে ফিরে বেনাপোলে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। 

মঙ্গলবার (১ জুন) সকালে ভারতফেরত ৭০ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ছয়জনের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়ে। তবে এদের মধ্যে কেউ ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট বা ব্লাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত কিনা তা এই মুহূর্তে জানা সম্ভব হয়নি।

এদিকে যশোর সীমান্তে করোনা পরিস্থিতি দিন দিন উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। শনাক্তের হার ২৪ শতাংশ। সেই সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ে ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ায় উদ্বেগ আরও বেড়েছে। একই সঙ্গে বিষয়টি ভাবাচ্ছে স্বাস্থ্যবিভাগকেও। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণা চালানোর পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যবস্থাও জোরদার করা হয়েছে বলে দাবি স্বাস্থ্য বিভাগের।

যশোরের সিভিল সার্জন শেখ আবু শাহীন বলেন, গত এপ্রিল মাসে যশোরে করোনা শনাক্তের হার ছিল ২৫ শতাংশ। মে মাসের শুরুতেই শনাক্তের হার কিছুটা নিম্নমুখী হলেও মাসের শেষের দিকে আবারো বাড়তে শুরু করে। মঙ্গলবার জেলায় ২৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৭০ জনের শরীরের করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ভারতফেরত পাসপোর্ট যাত্রী রয়েছেন ছয়জন। আক্রান্তদের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থেকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের করোনা ডেডিকেটেড ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। 

এদিকে যশোরে গতকাল পর্যন্ত ১৫ জনের শরীরে করোনার ভারতীয় ধরণ শনাক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন যশোরের মানুষ। সেই সঙ্গে উদ্বিগ্ন স্বাস্থ্য বিভাগও। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব ধরণের কার্যক্রম চালানো হচ্ছে।

বেনাপোল বন্দরের উপপরিচালক(ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, করোনা সংক্রমণ রোধে বন্দর এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। অনিয়মকারীদের জরিমানা করা হচ্ছে। 

বন্দরের পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধিতে পুলিশ, বিজিবি, আনসার, গ্রাম পুলিশ ও বাণিজ্যিক সংগঠনের নেতারা বন্দর এলাকায় মাইকিংসহ সচেতনতায় কাজ করছে।

বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ওসি আহসান হাবিব জানান,  প্রতিবেশী দেশ ভারতে করোনা পরিস্থিতি অবনতি হওয়ায় ১৪ জুন পর্যন্ত ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বৃদ্ধি করা  হয়েছে। এতে সাধারণ যাত্রীরা যাতায়াতের সুযোগ পাচ্ছেন না। তবে নিষেধাজ্ঞার আগে যারা ভারত ও বাংলাদেশে আটকা পড়েছিলেন তারা দূতাবাসের ছাড়পত্র নিয়ে নিজ নিজ দেশে ফিরছেন। গত ২৬ এপিল থেকে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা ও ভারতফেরতদের বাধ্যতামূলক ১৪ দিনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন শুরু হয়েছে। ২৬ এপ্রিল থেকে ৩১ মে পর্যন্ত ৪ হাজার ৩২ জন যাত্রী ভারত থেকে ফিরেছেন।

শার্শা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ইউছুপ আলী জানান, ভারতফেরতদের মধ্যে করোনা আক্রান্ত ছিল ৫৩ জন। আক্রান্তদের ছয়জনের শরীরে করোনার ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট  পাওয়া গেছে।

আতাউর রহমান/আরএআর