নাটোরে গত দুই দিনে করোনাভাইরাস শনাক্তের রেকর্ড হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪২ জনের শরীরে করোনা ধরা পড়েছে। যার হার শতকরা ৬২ শতাংশ এবং সোমবার এ হার ছিল ৬৭ দশমিক ৩০ শতাংশ।

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় করোনার সংক্রমণ ১ জুন ছিল ৫৩ দশমিক ১২ শতাংশ, ২ জুন ৩৯ দশমিক ১৩ শতাংশ, ৩ জুন ৪৮ দশমিক ২৭ শতাংশ, ৪ জুন ২৯ দশমিক ৬ শতাংশ, ৫ জুন ৪৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ, ৬ জুন ৫১ দশমিক ২১ শতাংশ, ৭ জুন ৬৭ দশমিক ৩০ শতাংশ ও সর্বশেষ ৮ জুন ৬২ শতাংশ। এ হিসাবে নাটোরে গত সাত দিনে করোনা সংক্রমণের গড় হার ৪৩ দশমিক ৫৮ শতাংশ।

নাটোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান মনে করেন, করোনা সংক্রমণের হার ও নতুন রোগীর সংখ্যা আনুপাতিক হারে বাড়লেও জেলায় নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা তেমন একটা বাড়ছে না। জুন মাসের ১ থেকে ৭ তারিখ পর্যন্ত মাত্র ২৩৩টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। জেলার ২০ লাখ মানুষের বিপরীতে এই নমুনা খুব সামান্য। ফলে সামাজিকভাবে সংক্রমণের পরিস্থিতি কেমন, তা জানা যাচ্ছে না।

এদিকে রোববার রাতে জেলার করোনা প্রতিরোধ কমিটির ভার্চুয়াল সভায় বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছে। সভায় বেশি করে নমুনা পরীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বিশেষ করে জনবহুল এলাকাগুলোতে ভ্রাম্যমাণ বুথ করে নমুনা পরীক্ষা করানো হবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার সকালে শহরের কানাইখালী কেন্দ্রীয় মসজিদ চত্বরে ভ্রাম্যমাণ বুথ উদ্বোধন করা হয়েছে।

অপরদিকে করোনা সংক্রমের হার বাড়ায় বুধবার (০৯ জুন) থেকে নাটোর সদর ও সিংড়া পৌর এলাকায় কঠোর লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. শাহরিয়াজ ঢাকা পোস্টকে বলেন, করোনার উপসর্গ দেখা না দেওয়া পর্যন্ত কেউ নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন না। ফলে নমুনা পরীক্ষার তুলনায় সংক্রমণের হার বেশি মনে হচ্ছে। কিন্তু সমাজভিত্তিক নমুনা পরীক্ষা করা হলে সংক্রমণ পরিস্থিতির সঠিক চিত্র জানা যেত। তিনি সবাইকে নমুনা পরীক্ষা করানোর আহ্বান জানান। বিনা খরচে এ পরীক্ষা করা হবে।

তিনি আরও বলেন, বুধবার সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী সাত দিন নাটোর সদর ও সিংড়া পৌরসভা এলাকায় কঠোর লকডাউন থাকবে। লকডাউনের ক্ষেত্রে জাতীয় নীতিমালা অনুসরণ করা হবে।

এদিকে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত আগের ২৪ ঘণ্টায় ৬৭ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৪২ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যেখানে শনাক্তের হার ছিল ৬২ শতাংশ। তার আগের দিন এই হার ছিল ৬৭.৩০ শতাংশ। 

নাটোর জেলায় মোট করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৯৪০ জন। এ সময় মৃত্যু হয়েছে ২৮ জনের। সোমবার বিকেল পর্যন্ত আক্রান্ত লোকজনের মধ্যে সদর হাসপাতালে ৩১ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছেন ৩৯ জন এবং হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৩৪৫ জন।

তাপস কুমার/এসপি