জলমহাল দখল নিয়ে বৃদ্ধকে গলা কেটে হত্যা
বৃদ্ধকে গলা কেটে হত্যা
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশার সুনই জলমহালের দখল নিয়ে শ্যামাচরণ বর্মণ (৬৫) নামে এক বৃদ্ধকে গলা কেটে হত্যা করেছে প্রতিপক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন। জলমহালে থাকা স্থাপনা (খলা) পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে জলমহাল পাড়ের আশপাশের গ্রামে উত্তেজনা বিরাজ করায় সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
পুলিশ জানায়, দ্বন্দ্বে জড়িত দুই পক্ষের মধ্যে একপক্ষে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ভাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন রুখন রয়েছেন। ধর্মপাশার বৃহৎ জলমহাল সুনই নিয়ে দুই মৎস্যজীবী সমিতির দ্বন্দ্ব চলছে অনেক দিন ধরে। জলমহালের খাজনা পরিশোধ করে দুই পক্ষই মালিকানা দাবি করে আসছে। একপক্ষ সম্প্রতি স্থানীয় সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রুখনের বিরুদ্ধে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনও করে। এই দ্বন্দ্বের জের ধরে বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৮টার দিকে জলমহালের পাড়ে থাকা একপক্ষের মাছের খলায় আরেকপক্ষ আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় প্রতিপক্ষের লোকজন শ্যামাচরণ বর্মণ নামে এক বৃদ্ধকে গলা কেটে হত্যা করে। এ ঘটনায় কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছেন।
সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান ঢাকা পোস্টকে জানান, জলমহালটির ইজারা নিয়ে স্থানীয় দুটি মৎস্যজীবী সমিতির দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ্ব চলছে। দুই মৎস্যজীবী সমিতির নেতা চন্দন বর্মণ এবং সুবীর বর্মণ খাজনা জমা দিয়ে রশিদ দেখিয়ে জলমহালের দখল নিতে চাইলে জেলা প্রশাসন কাউকেই দখল বুঝিয়ে দেয়নি। কিন্তু দুই পক্ষই ওখানে মাছ ধরার জন্য খলা নির্মাণ করেছে। চন্দন বর্মণের পক্ষ উচ্চ আদালত থেকে স্থগিতাদেশ পায়। জলমহাল অন্য পক্ষের লোকজনের দখলে ছিল। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ওখানকার স্থাপনা উচ্ছেদ করার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিলেও তিনি নির্দেশ পালন করেননি। বিষয়টি বার বার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এ অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে সুবীর বর্মণের লোকজন অন্য পক্ষের স্থাপনায় হামলা করে। এতে চন্দন বর্মণের বাবা শ্যামাচরণ বর্মণ নিহত হয়েছেন। হামলাকারীদের সঙ্গে স্থানীয় সংসদ সদস্যের ভাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোয়াজ্জেম হোসেন রুখন ছিলেন বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পুলিশ ২৩ জনকে আটক করেছে বলেও তিনি জানান।
আরএআর