এক বছরেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি সিলেট জেলা-মহানগর আ.লীগের কমিটি
সম্মেলনের এক বছর পার হলেও পূর্ণাঙ্গ হয়নি সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের কমিটি। জেলা ও মহানগর কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে ঘিরে চলছে দলীয় কার্যক্রম। তাদের সঙ্গে দূরত্ব থাকায় অনেকে দলীয় কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন না। কেউ কেউ আবার আলাদাভাবে দলীয় কর্মসূচি পালন করছেন।
স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, অভ্যন্তরীণ কোন্দলে এক বছরে জেলা ও মহানগর কমিটি পূর্ণাঙ্গ হচ্ছে না। জেলা ও মহানগর কমিটির দুই সাধারণ সম্পাদক নিজের পছন্দের লোকদের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান দিতে যাচ্ছেন। এতে বাদ পড়বেন আগের কমিটির অর্ধেক নেতা।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, গত বছরের ৫ ডিসেম্বর সিলেট নগরের আলিয়া মাদরাসা মাঠে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রার্থী ছিলেন ৩২ জন।
এর মধ্যে জেলায় সভাপতি পদে সাতজন ও সাধারণ সম্পাদক পদে নয়জন, মহানগরে সভাপতি পদে চার ও সাধারণ সম্পাদক পদে ১২ জন প্রার্থী ছিলেন। তাদের ২০ মিনিট সমঝোতার জন্য সময় দেয়া হয়। তবে তারা বিষয়টি দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর ছেড়ে দেন।
বিজ্ঞাপন
পরে উপস্থিত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দলীয় প্রধানের সঙ্গে পরামর্শ করে নতুন কমিটি ঘোষণা করেন। জেলা কমিটিতে অ্যাডভোকেট লুৎফুর রহমানকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান আর মহানগর কমিটিতে মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমেদকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে অধ্যাপক জাকির হোসেনের নাম ঘোষনা করেন ওবায়দুল কাদের।
সম্মেলনের এক মাসের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন ওবায়দুল কাদের। তবে এক বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি।
চলতি বছরের ২ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর যৌথসভায় দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দেশে যেসব জেলা ও মহানগর ইউনিটের সম্মেলন হয়েছে, কিন্তু পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি তাদের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে জমা দিতে নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশনার আলোকে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের দুই সাধারণ সম্পাদক ১৪ অক্টোবর প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে জমা দেন। তবে কমিটিতে ত্যাগীদের স্থান দেয়া হয়নি বলে অভিযোগ তোলেন একটি অংশের নেতারা। তারা কেন্দ্রে পাল্টা কমিটি জমা দেন।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক দফতর সম্পাদক শামসুল ইসলাম বলেন, দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে পরামর্শ না করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি কেন্দ্রে জমা দেয়া হয়েছে। এ কমিটিতে যোগ্যরা স্থান পায়নি বলে আমরা জানতে পেরেছি। তাই আরেকটি প্রস্তাবিত কমিটি কেন্দ্রে জমা দিয়েছি।
একই অভিযোগ করেন জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক উপ-দফতর সম্পাদক জগলু চৌধুরী। তিনি বলেন, জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে আমি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হয়েছিলাম। এই ক্ষোভ থেকে বর্তমান সাধারণ সম্পাদক আমাকে মূল্যায়ন করেননি। পুরো কমিটিতে ত্যাগী কর্মীদের স্থান হয়নি। তাই আমরা আরেকটি কমিটি কেন্দ্রে জমা দিয়েছি।
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন বলেন, আমরা কমিটি কেন্দ্রে জমা দিয়েছি। অনুমোদন করবে কেন্দ্রীয় কমিটি।
নেতাকর্মীদের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ বড় দল। সবাইকে কমিটিতে রাখা সম্ভব নয়। যাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে তাদের কমিটি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান বলেন, প্রস্তাবিত কমিটির বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হচ্ছে তা ঠিক হয়। কেন্দ্রীয় নেতারা খোঁজ নিলে তার প্রমাণ পাবেন।
এএম