আসামি ছাড়িয়ে নিতে এসআইকে কুপিয়ে জখম
রাজবাড়ীর কালুখালী থানা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আশিকুজ্জামান আশিককে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। শনিবার (২৬ জুন) দুপুরে জেলার বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের সোনাপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটেছে। আহত এসআই আশিককে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুপুর ১২টার দিকে সোনাপুর বাজারে সিভিল ড্রেসে আসামি ধরতে যান এসআই আশিক। তিনি হঠাৎ করেই ওই বাজারের অটোরিকশার সিরিয়ালম্যান সবুজ মোল্লার হাতে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে তার প্যান্টের পকেটে ইয়াবা ঢুকিয়ে দিয়ে তাকে আটক করেন। এ সময় সবুজের চিৎকারে আশপাশের মানুষজন এগিয়ে আসে। এগিয়ে আসা মানুষজন এসআইয়ের কাছে গ্রেফতারি পরোয়ানা দেখতে চায়। এ সময় অটোস্ট্যান্ডের লোকজনের সঙ্গে এসআই আশিকের কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে তা হাতাহাতিতে রূপ নেই। এ সময় বিক্ষুব্ধ লোকজন এসআই আশিককে মারধর করে ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয়রা বলেন, এর আগেও এসআই আশিকের বিরুদ্ধে কয়েকজনকে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ রয়েছে।
তবে স্থানীয় একটি সূত্রে জানা গেছে, বাজারের যানবাহন চলাচলের স্ট্যান্ড নিয়ে আগে থেকেই সেখানে দুটি পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। যে কারণে হঠাৎ করেই সিরিয়ালম্যান সবুজকে আটক করায় একটি পক্ষ এসআই আশিকের ওপর ক্ষুব্দ হয়। একপর্যায়ে তারা সবুজকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে এবং এসআই আশিককে মারপিটের পাশাপাশি পেটের ডানপাশে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এতে রক্তাক্ত জখম হন আশিক। তাকে ওই সময়ই স্থানীয়রা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বিজ্ঞাপন
নবাবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবুল হাসান আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, সোনাপুর বাজারটি আমার ইউনিয়নের মধ্যে। কিন্তু দীর্ঘদিন অটোবাইকের স্ট্যান্ড নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। শনিবার দুপুরে কালুখালী থানার এসআই আশিকুর রহমানসহ এক পুলিশ সদস্য এসে সবুজের হাতে হ্যান্ডকাপ পরান এবং ওয়ারেন্ট আছে বলে জানান। কিন্তু ওয়ারেন্ট দেখাতে না পারায় স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ওই ঘটনার সৃষ্টি হয়।
কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নাজমুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, জিআর ৬৪/২০ মামলার আসামিকে গ্রেফতারের জন্য আশিকুজ্জামান আশিককে সেখানে পাঠানো হয়। তবে কারা কী কারণে আশিককে মারপিট ও কুপিয়ে জখম করেছে তা খতিয়ে দেখা হবে। যারা পুলিশের ওপর হামলা করেছে তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
রাজবাড়ীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সালাউদ্দিন ঢাকা পোস্টকে জানান, বর্তমানে আশিকের শারীরিক অবস্থা ভালো রয়েছে। তবে যারাই এই ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। কালুখালী থানায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে একজনকে আটক করেছে পুলিশ।
মীর সামসুজ্জামান/আরএআর