মানিকগঞ্জ জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক ও পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুর রাজ্জাক রাজার বিরুদ্ধে হরিরমাপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম সোরহাবকে (৭০) মারধরের অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবর ঘটনার বিবরণ দিয়ে স্মারকলিপি দিয়েছেন উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

মঙ্গলবার (২৯ জুন) দুপুরে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের প্রতিবাদে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সামনে মানববন্ধন করেন উপজেলার বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

স্মারকলিপি সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক কলহের জের ধরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার ভাড়ারিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরের বাড়িতে গতকাল সোমবার (২৮ জুন) বিকেলে এক গ্রাম্য সালিসের আয়োজন করা হয়। এ সময় তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সালিসের একপর্যায়ে হরিরামপুর্ উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার শহিদুল ইসলাম সোরহাবকে কিলঘুষি ও কাঠের চেয়ার দিয়ে মারধর করা হয়। এতে তিনি গুরুতর আহত হলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। 

হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান, সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরসহ সংশ্লিষ্ট অনেকেই ওই সালিসে উপস্থিত ছিলেন।

হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেওয়ান সাইদুর রহমান বলেন, গ্রাম্য সালিসে কথা কাটাকাটির জের ধরে যুবলীগ নেতা আব্দুর রাজ্জাক রাজা বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলামকে মারধর করেন। একজন মুক্তিযোদ্ধাকে মারধর করা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার  দাবি জানান তিনি। 

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম সোরহাব বলেন, গ্রাম্য সালিসের জন্য ভাড়ারিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কাদেরের বাড়িতে আমি ও আরেকজন মুক্তিযোদ্ধা যাই। সালিসের একপর্যায়ে জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রাজা আামাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে। একজন মুক্তিযোদ্ধা হয়ে আজকে কথিত যুবলীগ নেতার হাতে লাঞ্ছিত হতে হলো, যা খুব দুঃখজনক। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেন। সঠিক বিচার না পেলে আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোনো পথ থাকবে না বলেও হুমকি দেন এই বীর মুক্তিযোদ্ধা

অভিযুক্ত জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক রাজা জানান, মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের বিষয়টি সঠিক নয়। তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। তবে বিষয়টি মীমাংসার প্রক্রিয়া চলছে। খুব শিগগিরই বিষয়টি সমাধান করা হবে। 

হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুল ইসলাম বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাকে মারধরের বিষয়ে একটি স্মারকলিপি পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।  

সোহেল হোসেন/আরএআর