সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক প্রামাণিক

রাজশাহীর ভবানীগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের পোস্টার বাদে অন্য প্রার্থীদের ব্যানার-পোস্টার-ফেস্টুন উধাও করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। শনিবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে বাগমারা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই অভিযোগ আনেন বিএনপির আবদুর রাজ্জাক প্রামাণিক। একই অভিযোগ স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম মামুনুর রশিদ ও কামাল হোসেনেও।

আগামী ১৬ জানুয়ারি জেলার বাগমারা উপজেলার এই পৌরসভায় ভোটগ্রহণ। এতে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের আবদুল মালেক মণ্ডল, বিএনপির আবদুর রাজ্জাক প্রামাণিক এবং স্বতন্ত্র এসএম মামুনুর রশিদ ও কামাল হোসেন অংশ নিচ্ছেন। 

বিএনপির প্রার্থী আবদুর রাজ্জাক অভিযোগ করেন, শুক্রবার (৮ জানুয়ারি) রাতে পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে ঝোলানো পোস্টার ও ব্যানার আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের ছাড়া অন্য তিন প্রার্থীর পোস্টার নেই। রাতের বেলায় পোস্টারগুলো ছিঁড়ে গায়েব করা হয়েছে। ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীর লোকজন এ ঘটনায় জড়িত।

আবদুর রাজ্জাক আরও অভিযোগ করে বলেন, তাকে প্রচারণাও চালাতে দেওয়া হচ্ছে না। তার কর্মী-সমর্থকদের বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখানো হচ্ছে, মারধর করা হচ্ছে। বিপুলসংখ্যক বহিরাগতদের নিয়ে প্রচারণা চালানো ছাড়াও কেন্দ্র দখলের হুমকি দেয়া হয়েছে। এসব ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ দেয়া হলেও ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

পোস্টার গায়েবের প্রতিবাদে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মামুনুর রশিদের সভা

এর আগে শনিবার সকালে ভবানীগঞ্জ জিরো পয়েন্টে স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম মামুনুর রশিদ প্রতিবাদ সভা করেন। সেখানে তার নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা বীরেন্দ্রনাথ সরকার বলেন, তাদের কর্মী-সমর্থকদের মারধর করা হচ্ছে। ভোটকেন্দ্রে না যেতে ও কেন্দ্র দখলের হুমকি দেয়া হচ্ছে। পৌরসভার বিভিন্ন স্থানে ঝোলানো পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন— এক রাতেই গায়েব করে দেয়া হয়েছে।

মেয়র প্রার্থী এসএম মামুনুর রশিদ বলেন, বর্তমান সরকার যখন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে ভোট নেয়ার ঘোষণা দিয়েছে, তখন সরকারেরই ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য স্থানীয় একটি পক্ষ উঠেপড়ে লেগেছে। এসব কাজ সুষ্ঠু ভোটের লক্ষণ হতে পারে না।

আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী কামাল হোসেন অভিযোগ করেন, তারও সব পোস্টার উধাও হয়ে গেছে। এমনকি তার নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনের পোস্টারও ছিঁড়ে ফেলা হয়।

তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম সারওয়ার আবুল। তিনি বলেন, তারা (প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা) নিজেরাই নিজেদের পোস্টার ছিঁড়েছেন। তিনি পাল্টা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের প্রার্থীর ৫ নম্বর ওয়ার্ডের নির্বাচনী কার্যালয় ভাঙচুর করে পোস্টারে আগুন দেয়া হয়েছে।

অভিযোগ বিষয়ে জানতে চাইলে বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাক আহম্মেদ বলেন, লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।

এ বিষয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা বলেন, সব অভিযোগ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। তাদের থানায় অভিযোগ দেয়ারও পরামর্শ দেয়া হয়েছে। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে একটি দল মাঠে তৎপর রয়েছে। 

এমএসআর