স্বাস্থ্য কর্মকর্তার গাড়ি আধা ঘণ্টা আটকে রাখলেন এসআই
মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফারহানা কবিরের সরকারি গাড়ি আটকে কাজে বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশের এক সাব-ইন্সপেক্টরের (এসআই) বিরুদ্ধে। সোমবার (৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তল্লাশিচৌকিতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, সকালে ডা. ফারহানা কবির অফিসিয়াল গাড়ি নিয়ে করোনা ডিউটি করতে উপজেলার ফোর্ডনগরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পথিমধ্যে সিংগাইর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশের তল্লাশিচৌকিতে তার গাড়িটি আটকে দেওয়া হয়।
বিজ্ঞাপন
ডাক্তারের পরিচয় এবং অনেক বোঝানোর পরেও অফিসিয়াল গাড়িটি না ছাড়ায় বাধ্য হয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারকে (ইউএনও) ফোন করেন ওই ডাক্তার। পরে ইউএনও ফোনে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার গাড়িটি ছেড়ে দেয় পুলিশ সদস্যরা।
ডা. ফারহানা কবির বলেন, অফিসিয়াল গাড়ি নিয়ে উপজেলার ফোর্ডনগর কমিউনিটি ক্লিনিকে যাচ্ছিলাম। এ সময় উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় যাওয়া পরে আমার গাড়িটি আটকে দেয় পুলিশ। পরিচয় দেওয়ার পরেও দুই জন কনস্টেবল গাড়িটি আটকে রাখে। তারা বলে, স্যার বললে আপনাকে যেতে দেব। তখন আমি তাদের জিজ্ঞাসা করি তোমাদের স্যার কে? তারা বলে, এসআই শহীদ।
বিজ্ঞাপন
ফারহানা কবির আরও বলেন, পরে আমার সঙ্গে থাকা হেলথস ইন্সপেক্টর গিয়ে ওই এসআইকে বলার পরেও আমার গাড়ি ছাড়েনি। প্রায় ৩০ মিনিটি আমাদের আটকে রাখা হয়। আশপাশে অনেক লোকজনও জড়ো হয়ে গিয়েছিল। আমি অপমানিত বোধ করছিলাম। পরে বাধ্য হয়ে সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ফোন করার পর আমার গাড়িটি ছেড়ে দেওয়া হয়।
তিনি বলেন, সরকারি ডাক্তার হয়ে সরকারি কাজে যাওয়ার পথে চেকপোস্টে পুলিশের এমন আচরণ কাম্য নয়। আমরাও তো সরকারের দায়িত্ব পালন করছি। এ ঘটনার বিষয়ে জেলা সিভিল সার্জনকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।
সিংগাইর থানা সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) শহীদুল আলাম বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তল্লাশিচৌকি বসানো হয়। এ সময় ওই ডাক্তারের গাড়িটিও থামানো হয়। তবে ওই ডাক্তারের গাড়িটি তিন-চার মিনিট আটকে রাখা হয়েছিল। পরিচয় পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার গাড়িটি ছেড়ে দেওয়া হয়। ডাক্তারের সঙ্গে কোনো পুলিশ সদস্য খারাপ আচরণ করেনি।
সিংগাইর ইউএনও রুনা লায়লা বলেন, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ডা. ফারহানা কবির আমাকে ফোনে বিষয়টি জানালে আমি তাৎক্ষণিক মোবাইল ফোনে কর্তব্যরত ওই পুলিশ সদস্যকে গাড়িটি ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেই। আধা ঘণ্টা আটকা থাকার পরে ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। ওই এসআইকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বলেন, করোনা সংক্রমণ রোধে সবাই মিলেই একযোগে কাজ করা হচ্ছে। ওই চিকিৎসকের সঙ্গে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। এটার সমাধান হয়ে গেছে বলে জানান তিনি।
সোহেল হোসেন/এমএসআর