মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল
চালু হয়নি আইসিইউ, নেই অক্সিজেনের সংকট
দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত রোগী, বাড়ছে মৃত্যুর মিছিলও। দেশের উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণের জেলাগুলোতে করোনা পরিস্থিতি দিন দিন অবনতি দিকে যাচ্ছে।
সারাদেশের মতো রাজধানীর পাশের জেলা মানিকগঞ্জেও বাড়ছে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। আক্রান্ত এসব রোগীর সেবা দিতে প্রস্তুত রয়েছে জেলার ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালে স্থাপন করা ১০০ শয্যার কোভিড ডেডিকেটেট ইউনিট।
বিজ্ঞাপন
তবে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও দক্ষ জনবল না থাকায় ১০০ শয্যা করোনা ইউনিটে থাকা নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রের পাঁচটি (আইসিইউ) বেড এখনও চালু করতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জেলায় সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় হাসপাতালে প্রতিদিন ভর্তি হচ্ছেন করোনা আক্রান্ত রোগীরা।
এসব রোগীর মধ্যে অনেকের রয়েছে শ্বাসকষ্ট। তবে করোনা ইউনিটে রোগীদের অক্সিজেন সরবরাহ দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন রয়েছে। করোনা ডেডিকেটেট ইউনিটে কোভিড রোগীদের জন্য অক্সিজেনের কোনো সংকট নেই বলে দাবি হাসপাতাল কর্তপক্ষের।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (৫ জুলাই) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন স্থান থেকে মানুষ করোনা পরীক্ষার জন্য নুমনা দিতে এসেছেন জেলা হাসপাতালে। সিরিয়ালে দাঁড়িয়ে নমুনা দিচ্ছেন এসব মানুষ। আবার অনেকে এসেছেন করোনাভাইরাস পরীক্ষার রিপোর্ট নিতে।
সকাল ১০টা ৪৮ মিনিট। করোনায় আক্রান্ত বাবাকে দেখতে ছোট সন্তানকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন সদর উপজেলার জাগীর এলাকার বাসিন্দা তানিয়া আক্তার। চার দিন ধরে কোভিড ইউনিটে ভর্তি আছেন তার বাবা নুরুল ইসলাম।
হাসান মিয়াও নামের আরেক ব্যক্তিও যাচ্ছেন করোনায় আক্রান্ত স্বজনকে দেখতে। কোভিড ইউনিটে রোগীদের ভালো মতোই সেবা দেওয়া হয় বলে জানান তানিয়া আক্তার ও হাসান মিয়া।
অন্যদিকে কঠোর লকডাউনের ফলে হাসপাতালেও বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে কমেছে সাধারণ রোগীর সংখ্যা। হাসপাতলের নতুন ভবনের নিচতলায় গর্ভবতী নারীদের টিকিট কাউন্টারে সেবাগ্রহীতাদের দীর্ঘসারি দেখা গেছে। লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট নিচ্ছেন তারা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের ৬ষ্ঠ, ৭ম এবং ৮ম তলা (কেবিন ব্লক) পুরোটাই কোভিড ডেডিকেটেট। এখানে সেন্ট্রাল অক্সিজেন লাইন, নয়টি ভেন্টিলেটর, ১২টি হাইফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা, ১৩টি অক্সিজেন কনসেনট্রেট, ১০০ অক্সিজেন সিলিন্ডার, ৯৫ সাধারণ বেড এবং ৫টি আইসিইউ বেড রয়েছে।
বর্তমানে এই কোভিড হাসপাতালে করোনা পজিটিভ ৫৪ জন রোগী ভর্তি আছেন এবং আইসোলেশন ওয়ার্ডের ২৫ জনসহ মোট ৭৯ রোগী ভর্তি আছেন। এদিকে জেলায় ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫ জন। করোনায় মারা গেছেন একজন।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আশ্বাদ উল্লা ঢাকা পোস্টকে বলেন, আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কয়েক দিন ধরেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে কোভিড ইউনিটের পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও সরঞ্জাম রয়েছে। কিন্তু প্রশিক্ষিত চিকিৎসক ও দক্ষ জনবল না থাকায় কোভিড ইউনিটের আইসিইউ বেড চালু করা যায়নি।
এমএসআর