ফোন করলেই অসুস্থ ব্যক্তির কাছে পৌঁছে যাচ্ছে যানবাহন

দেশজুড়ে যখন কঠোর লকডাউন চলছে, তখন পিরোজপুর জেলার কাউখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিয়েছেন একটি ভিন্ন উদ্যোগ। প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতে এবং অসুস্থ ও সংকটাপন্ন রোগীদের দুর্ভোগ লাঘবে চালু করেছেন পরিবহনসেবা। এতে রয়েছে নির্দিষ্ট মোবাইল নম্বর। যেখানে ফোন করলেই অসুস্থ ব্যক্তির কাছে পৌঁছে যাচ্ছে যানবাহন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, লকডাউনের শুরু থেকে উপজেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী স্বাস্থ্যবিধি না মানায় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ৬৮টি মামলায় ৪১ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী রাস্তার মোড়ে মোড়ে টহল ব্যবস্থা নিয়েছে। সাধারণ মানুষকে ঘরে থাকার জন্য সচেতনতামূলক প্রচার ও মাস্ক বিতরণ করা হচ্ছে।

এমন সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খালেদা খাতুন রেখার ব্যতিক্রমী উদ্যোগে প্রশংসায় ভাসছেন তিনি।

স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশের মতো লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করছে কাউখালী উপজেলা প্রশাসন। সবকিছু বন্ধ থাকায় বেশি অসুবিধায় পড়েছেন অসুস্থ ও দরিদ্র রোগীরা। এ দুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনা করে ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ১১টি অটোরিকশা, একটি মাহিন্দ্র গাড়ি চালু করেছেন। সেই সঙ্গে সন্ধ্যা নদীতীরবর্তী দরিদ্র রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে নিতে নৌপথে চালু করেছেন একটি ট্রলার, যা সেবা দেবে ২৪ ঘণ্টা।

কাউখালী উন্নয়ন পরিষদের সভাপতি ও সামাজিক উদ্যোক্তা আবদুল লতীফ খসরু বলেন, এ সময় প্রত্যন্ত এলাকায় অসুস্থ রোগীদের পরিবহনে কোনো বিকল্প ব্যবস্থা ছিল না। আমাদের ইউএনও মহোদয় মানবিক বিবেচনায় নিজ উদ্যোগে অসুস্থ মানুষকে হাসপাতালে নিতে পরিবহনসেবা চালু করেছেন। এটি সত্যিই একটি মহতী উদ্যোগ।

কাউখালী ইউএনও খালেদা খাতুন রেখা ঢাকা পোস্টকে বলেন, পুরো উপজেলা লকডাউনে গৃহবন্দীদের মাঝে খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু গোটা উপজেলা যানবাহন বন্ধ, সে কারণে প্রত্যন্ত এলাকার অসহায় রোগীদের দ্রুত হাসপাতালে নিতে ১১টি অটোরিকশা, একটি মাহিন্দ্র ও নৌপথে একটি ট্রলার সার্বক্ষণিক পরিবহন সেবা চালু রাখা হয়েছে।

এ ছাড়া অনিয়ন্ত্রিত চিকিৎসাব্যবস্থার কারণে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেশি হচ্ছে। ফার্মেসিতে গিয়েই জ্বর বা মাথাব্যথা আছে বললেই সেখান থেকে ব্যবস্থাপত্র ছাড়াই দেওয়া হচ্ছে নাপা প্যারাসিট্যামলসহ নানা ওষুধ। যে কারণে লোকজন পরীক্ষা না করেই শুধু জ্বর মনে করে নাপা খাচ্ছে। অথচ তাদের মধ্যে অনেকেই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত। এই পরীক্ষা সপ্তাহে প্রায় প্রতিদিনই করা হচ্ছে।

তাই অনুরোধ করব, টেস্ট করে ওষুধ গ্রহণ করুন। অনিয়ন্ত্রিতভাবে যে প্যারাসিটামল বিক্রি করা হচ্ছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সেটা নিয়ন্ত্রণ করা দরকার বলে আমি মনে করি।

মো. আবীর হাসান/এনএ