শিশু মরিয়ম

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাবার লাশের পাশে কান্না করা সাত বছরের সেই শিশুটির পরিচয় পাওয়া গেছে। শিশুটি পোরশা উপজেলার চকবৃষ্ণপুরের কলোনীপাড়া গ্রামের মৃত মজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে মরিয়ম খাতুন। তার পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা সহায়তা দেওয়া হয়েছে। 

সম্প্রতি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাবার লাশের পাশে কান্নারত মেয়েটির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। মেয়েটির কান্না সবার হৃদয় ছুঁয়ে যায়। 

মৃত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত শনিবার (০৩ জুলাই) কলোনীপাড়া গ্রামের ফজর বিশ্বাসের ছেলে মজিবুর রহমানের (৪০) জ্বরের সঙ্গে শ্বাসকষ্ট হয়। পরে তিনি সাপাহার উপজেলায় ডা. হামিদের কাছে চিকিৎসা নিয়ে নিজ বাড়িতে ফেরেন। ওইদিন রাত ৯টার দিকে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে তাকে পোরশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে পরদিন সকাল ৮টার দিকে সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে চিকিৎসার আগেই মৃত্যু হয় মজিবুরের। 

হাসপাতালে বাবার লাশের পাশে কান্না করছে মরিয়ম

এদিকে মজিবুরের মৃত্যুর পর অ্যাম্বুলেন্স খুঁজতে যায় তার শ্যালক আলমগীর হোসেন। এ সময় মজিবুরের ছোট মেয়ে মরিয়ম বাবার লাশের পাশে বসে কান্নাকাটি করে। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে ব্যাপক তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়। পরে বিকেল ৪টার দিকে অ্যাম্বুলেন্সে মজিবুরের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে এসে সন্ধ্যা ৬টায় দাফন করা হয়। মজিবুর পেশায় হাঁড়ি পাতিলের ফেরিওয়ালা ছিলেন।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মো. হারুন অর রশিদ জানান, সকালে ভিডিওটি ফেসবুকে দেখার পর আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তার বাড়ি খুঁজে বের করে পরিবারের খোঁজখবর নিতে বলি। পরে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মৃত মজিবুর রহমানের বাড়ি খুঁজে বের করে তার পরিবারের খোঁজখবর নেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। 

মা ও ভাইয়ের সঙ্গে মরিয়ম

জেলা প্রশাসক বলেন, মৃত ব্যক্তির পরিবারে স্ত্রী, ছোট দুই কন্যা সন্তান এবং ১০ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। পরিবারটি অসহায় এবং আয়ের অন্য কোনো উৎস নেই। ফলে মৃত ব্যক্তির স্ত্রী তানজিলার হাতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া একটি মুদি দোকান করে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

শামীনূর রহমান/আরএআর