নাটোরের নলডাঙ্গায় ফেসবুকে লাইভ চলাকালে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে তলিয়ে যাওয়া ইমন আলীর মরদেহ প্রায় ২৬ ঘণ্টা পর দেড় কিলোমিটার দূর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বুধবার (০৭ জুলাই) বিকেল ৩টার দিকে নলডাঙ্গা উপজেলার পশ্চিম সোনাপাতিল এলাকা থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয় বলে ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম।

নিহত ইমন পার্শ্ববর্তী রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার সাধনপুর পঙ্গু নিকেতনের বিজনেস ম্যানেজমেন্ট বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

জানা গেছে, মঙ্গলবার (০৬ জুলাই) দুপুর ২টার দিকে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে এলাকার মানুষ প্রায় সারারাত খুঁজেও তার কোনো সন্ধান পায়নি। পরে বুধবার সকাল থেকে আবারও এলাকাবাসীকে নিয়ে ফায়ার সার্ভিস ও রাজশাহী থেকে আসা ডুবুরি দল নদীর ভাটির দিকে নৌকা নিয়ে ইমনের সন্ধানে নামে। 

দীর্ঘ ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা খোঁজাখুঁজির পর তার নিথর দেহ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ঘটনাস্থলে থেকে উদ্ধার অভিযান সমাপ্ত করেন। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ইমনের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা সহায়তা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। 

এদিকে একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পাগলের মতো বিলাপ করছেন কৃষক সিরাজুল ইসলাম। ইমনের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। 

নলডাঙ্গা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আলিম সরদার জানান, মঙ্গলবার দুপুরে হলুদ ঘর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠের সামনে বারনই নদীতে বর্ষায় নতুন পানি আসায় বিভিন্ন বয়সী মানুষ ও শিশুরা সেখানে ঝাঁপ দিচ্ছিল। এ সময় নীল গেঞ্জি ও লুঙ্গি পরে ইমন আলী সাইকেল নিয়ে সেখানে আসেন। পরে নদীর পাড়ে সাইকেল রেখে দৌড়ে গিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেন তিনি। ডিগবাজি স্টাইলে ঝাঁপ দেওয়ার পর তার পা দুটো ওপরে থাকতেই ভেসে ওঠে তার দেহ। এরপর ভাসতে ভাসতে কিছু দূর যাওয়ার পর তলিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর আজ বিকেলে তার সন্ধান পাওয়া যায়।

স্থানীয় বাসিন্দা মামুনুর রশীদ জানান, ইমন নদীতে ঝাঁপ দেওয়ার পর তার ঘাড় মাটিতে গিয়ে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। ঘাড়ে আঘাত লাগলে ঘাড় ভেঙে যায়। এ কারণে হয়তো সে আর উঠতে পারেনি। 

নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, নিখোঁজ হওয়ার ২৬ ঘণ্টা পর তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার কাজে ফায়ার সার্ভিস ও রাজশাহী থেকে আসা ডুবুরি দলসহ স্থানীয়রা সহযোগিতা করেছেন। ইমনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

তাপস কুমার/আরএআর