লিমনের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার ঝুমুরের মরদেহ কবর থেকে ওঠানো হচ্ছে

মুন্সিগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মেদিনী মন্ডল আনোয়ার চৌধুরী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক আবু নাছের লিমনের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার ঝুমুরের কবর থেকে লাশ ওঠানো হয়েছে।

রোববার (১০ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে মাওয়া চৌরাস্তা-সংলগ্ন পশ্চিম কুমারভোগ কবরস্থান থেকে মুন্সিগঞ্জের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইলিয়াস শিকদারের উপস্থিতিতে পুলিশ মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।

আবু নাছের লিমন প্রায় ১৬ থেকে ১৭ বছর আগে শ্রীনগরের সমষপুর গ্রামের জয়নাল খার মেয়ে তাহমিনা আক্তার ঝুমুরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের সংসারে আনাছ (১৪) ও আহাদ (৭) নামের দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে। পাঁচ-ছয় বছর আগে দিলরুবা আক্তার নামে এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন লিমন। তাদের এ অবৈধ সম্পর্ক জানাজানি হলে স্ত্রী তাহমিনা বিষয়টি লিমনকে জিজ্ঞাসা করলে তাকে প্রায়ই মারধরসহ নানাভাবে অত্যাচার করতেন।

এর আগে স্ত্রী হত্যার অভেযোগে আবু নাছের লিমনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়। মামলায় অপর আসামি করা হয়েছে লিমনের পরকীয়া প্রেমিকা দিলরুবা আক্তারকে। মামলার পর থেকে লিমন পলাতক রয়েছেন। লিমন একটি জাতীয় পত্রিকার লৌহজং প্রতিনিধি হিসেবেও কর্মরত রয়েছেন। তিনি উত্তর মেদিনী মণ্ডল গ্রামের ওহাব খার ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আবু নাছের লিমন প্রায় ১৬ থেকে ১৭ বছর আগে শ্রীনগরের সমষপুর গ্রামের জয়নাল খার মেয়ে তাহমিনা আক্তার ঝুমুরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের সংসারে আনাছ (১৪) ও আহাদ (৭) নামের দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে। পাঁচ-ছয় বছর আগে দিলরুবা আক্তার নামে এক নারীর সঙ্গে পরকীয়া প্রেমে জড়িয়ে পড়েন লিমন। তাদের এ অবৈধ সম্পর্ক জানাজানি হলে স্ত্রী তাহমিনা বিষয়টি লিমনকে জিজ্ঞাসা করলে তাকে প্রায়ই মারধরসহ নানাভাবে অত্যাচার করতেন।

গত ২৪ জুলাই লিমন তার পরকীয়া প্রেমিকা দিলরুবাকে নিয়ে তার বাড়িতে যান। এ সময় স্ত্রী তাহমিনা দিলরুবাকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বললে লিমন ও দিলরুবা ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। এ সময় তারা তাহমিনার গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। এরপর কাউকে কিছু না জানিয়ে অজ্ঞাতনামা পাঁচ-ছয়জন লোক নিয়ে রাত আড়াইটার দিকে পশ্চিম কুমারভোগ কবরস্থানে মরদেহ দাফন করেন। ঘটনার সময় লিমন ও তাহমিনার দুই ছেলে তাদের নানাবাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল।

গত মাসে মামলাটি আদালত থেকে থানায় আসে। ১০ জানুয়ারি একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নিহত তাহমিনা আক্তারের মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মো. আলমগীর হোসাইন, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)

এদিকে স্বজনরা তাহমিনার মৃত্যুসংবাদ জানতে পেরে লিমনের কাছে মৃতুর কারণ জানতে চাইলে তিনি কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।

এজাহারে আরও বলা হয়, থানায় মামলা দিতে গেলে পুলিশ মামলা নিতে নানা তালবাহানা শুরু করে। তাই আদালতে মামলা করেছেন নিহত তাহমিনা আক্তারের ভাই মো. কামরুজ্জামান খান। পরে মুন্সিগঞ্জ সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে গত ১০ আক্টোবর একটি সিআর মামলা করা হয়।

লৌহজং থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগীর হোসাইন ঢাকা পোস্টকে জানান, গত মাসে মামলাটি আদালত থেকে থানায় আসে। ১০ জানুয়ারি একজন ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নিহত তাহমিনা আক্তারের মরদেহ কবর থেকে তোলা হয়। ময়না তদন্তের প্রতিবেদন পাওয়া গেলে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এনএ