গাজীপুরের কালিয়াকৈরে আগুনে বসতবাড়ি পুড়ে ছাই

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে রান্নার কাজে ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে ঘটনাস্থলেই স্বামী-স্ত্রীসহ চারজন নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০ জন। সোমবার (১১ জানুয়ারি) ভোর ৫টার দিকে উপজেলার কালামপুর পল্লীবিদ্যুৎ এলাকার পূর্বপাড়া নব্বই কলোনিতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এদিকে, বিস্ফোরণের ফলে সৃষ্ট আগুনে পার্শ্ববর্তী চারটি বাড়ির প্রায় ৫০টি ঘর পুড়ে গেছে। আগুন লাগার পর অনেকেই ঘর থেকে বের হলেও চারজন ভেতরে আটকা পড়ে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ডাস্পিংয়ের সময় মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।

নিহত হলেন- স্থানীয় গার্মেন্টস শ্রমিক গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার সন্ধ্যাইলপুর গ্রামের মিলন মিয়া (৪১) ও তার স্ত্রী মুন্নি বেগম (২৯) এবং একই এলাকার আশরাফ আলীর ছেলে ফরহাদ হোসেন (৪০), গাইবন্ধার জগন্নাথপুরের পলাশবাড়ী গ্রামের উসমান গনির ছেলে আব্দুল আউয়াল (৪২)। নিহতরা একই বাড়ির পাশাপাশি কক্ষের ভাড়াটিয়া।

অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের মরদেহ সারি করে রাখা হয়েছে

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলার কালামপুর এলাকায় মোহাম্মদ আলীর ভাড়া বাড়ির এক ভাড়াটিয়া রান্নার করার জন্য গ্যাসের চুলা জ্বালাতে যায়। এ সময় হঠাৎ বিস্ফোরণে মুহূর্তে আগুনের লেলিহান শিখা সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। তাৎক্ষণিক আশপাশের তিনটি বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ওই সময় বাড়ির অনেকেই ঘুমিয়ে ছিল। পরে স্থানীয়ভাবে আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়া হয়। 

কালিয়াকৈর ফায়ার স্টেশনের স্টেশন অফিসার কবিরুল আলম জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে দমকল বাহিনীর কালিয়াকৈর ও জয়দেবপুরের চারটি ইউনিট দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ ঘটনায় আহত কয়েকজনকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। গ্যাস সিলিন্ডারের বাল্বের লিকেজ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হলেও তদন্তের পর আগুন লাগার প্রকৃত কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে। আগুন লাগার পর অনেকেই ঘর থেকে বের হলেও চারজন ভেতরে আটকা পড়ে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার পর ডাস্পিংয়ের সময় মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।

কালিয়াকৈর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাজীব চক্রবর্তী বলেন, এই ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মরদেহগুলো গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী হাফিজুল আমিন (ইউএনও) বলেন, জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে কম্বল বিতরণ করা হবে এবং নিহতদের পরিবারকে দাফনকার্যের জন্য ২০ হাজার করে টাকা দেওয়া হবে। 

এসপি/আরএআর