ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় মাছ চুরির অপবাদ দিয়ে জুয়েল রানা (৯) নামে এক শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে রমজান আলী নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

সোমবার (১২ জুলাই) রাতে পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এ অভিযোগ করেন নির্যাতনের শিকার হওয়া শিশুর বাবা-মা। এর আগে, গত শুক্রবার সকালে উপজেলার মল্লিকপুর গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। সম্প্রতি ওই নির্যাতনের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।

নির্যাতনের শিকার শিশু জুয়েল রানা (৯) উপজেলার ৮ নম্বর দৌলতপুর ইউনিয়নের মল্লিকপুর সরকার পাড়া গ্রামের মনির উদ্দিনের ছেলে। সে পূর্ব মল্লিকপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। 

জানা গেছে, শুক্রবার সকালে পীরগঞ্জ উপজেলার মল্লিকপুর সরকার পাড়া গ্রামে জাল থেকে মাছ চুরির অপবাদ দিয়ে গাছের সঙ্গে গরুর দড়িতে বেঁধে পেটানো হয় শিশু জুয়েলকে। পরে জুয়েল বাসায় গিয়ে ভয়ে কাউকে বিষয়টি না জানিয়েই চুপ করেই থাকে। 

পরদিন পায়ে অনেক ব্যথা থাকলেও ভয়ে বাসায় কিছু বলেনি শিশুটি। অবশেষে ব্যথায় থাকতে না পেরে সোমবার বন্ধুর মাধ্যমে বাবা-মাকে বিষয়টি জানায় সে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শিশু জুয়েলকে তার পরিবার পীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করায়।

শিশুটির বাবা মনির উদ্দিন অভিযোগ করেন, বিনা কারণে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে রমজান আলী আমার ছেলেকে গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে মেরেছে। এমন একটি মাসুম শিশুকে কেউ এভাবে মারতে পারে? আমি এর সঠিক বিচার চাই। আমার ছেলে চুরি করেনি, রমজান মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে।

শিশুটির মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ছেলেকে গরু বাঁধার রশি দিয়ে গাছের সঙ্গে বেঁধে মেরেছে। রমজান বড় অন্যায় করেছে। আমার ছেলে ভয়ে আমাদের কিছু বলেনি। পরে তার বন্ধুর মাধ্যমে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। তাকে অনেক মেরেছে, গাছের সঙ্গে উল্টো করে বেঁধে মেরেছে। পা ফুলে গেছে। অনেক কষ্ট পেয়েছে সে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

এদিকে, অভিযোগের কথা স্বীকার করে রমজান আলী বলেন, আমি প্রায় প্রতিদিনই জাল দিয়ে মাছ ধরি। আর জুয়েল এসে জালের ওপর পা দেয়, না বলেই মাছ নিয়ে চলে যায়। আমি তাকে অনেকবার নিষেধ করেছি। সে শোনে না। সেদিন তাকে ধরে ইয়ার্কি করে বেঁধে বলেছি, তোকে এভাবে বেঁধে মারব। এ সময় তাকে দু-একটা বাড়ি দিয়ে ছেড়ে দিয়েছি। তাকে অনেক মারপিট করা হয়নি। পরিবারের লোকেরা মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে।

পীরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় বলেন, বিষয়টি শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মো. নাহিদ রেজা/আরএইচ