আবদুর রশিদ ও ফিরোজা বেগম দম্পতি করোনায় আক্রান্ত। কিন্তু জীবনযুদ্ধে হেরে শনিবার ভোরে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান ফিরোজা বেগম। আবদুর রশিদ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। স্ত্রীর মৃত্যুর খবরে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। জীবনসঙ্গীকে শেষবারের মতো দেখার জন্য হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ছুটে আসেন। শনিবার (৩১ জুলাই) বিকেলে এমন একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে কুমিল্লার নবাববাড়ি এলাকায়।

জানা গেছে, হাসপাতাল থেকে স্ত্রীর মরদেহ দেখার অনুমতি মিললেও এলাকার প্রভাবশালীদের নিষেধাজ্ঞার কারণে করোনা আক্রান্ত স্বামীকে বাড়িতে যেতে নিষেধ করা হয়। বাড়িতে যেতে না পেরে নবাববাড়িতে (বিবেকের মরদেহ গোসলের স্থান) স্ত্রীকে শেষবারের মতো দেখতে আসেন।  দূর থেকে কাফনে মোড়ানো স্ত্রীকে দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েন স্বামী। এ সময় সন্তান ও আত্মীয়-স্বজনদের
কান্নায় আশপাশের পরিবেশ ভারী হয়ে উঠে।

বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তুলে ধরেন বিবেকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইউসুফ মোল্লা টিপু। তিনি জানান, আমাদের ফোনে অনুরোধ করা হয়েছিল ফিরোজা বেগমের মরদেহ গোসলের জন্য। আমরা যখন নবাব বাড়িতে উনার মরদেহের গোসল সম্পন্ন করি, এরই মধ্যে জানতে পারি ফিরোজা বেগমের স্বামী আবদুর রশিদ বাড়িতে গিয়ে স্ত্রীর মরদেহ শেষবারের মতো দেখতে চান। তখন তার স্বজনদের ফোনে জানতে পারলাম, করোনা আক্রান্ত কাউকে গ্রামে যেতে নিষেধ করছে কে বা কারা। যে কারণে আবদুর রশিদ হাসপাতাল থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করেই চলে আসেন। এ সময় যে হৃদয়বিদারক পরিবেশ তৈরি হয় তা বলার মতো না।

ইউসুফ মোল্লা টিপু আরও জানান, করোনার কারণে মানুষ মানুষকে কিভাবে এড়িয়ে যায়- এটা যেমন দেখলাম আবার স্ত্রীর প্রতি স্বামীর অকৃত্রিম ভালোবাসাও দেখলাম। এ মহামারির সময় আমাদের উচিত পরস্পরের পাশে থাকা।

ফেসবুকে কমেন্টে জাহিদুল ইসলাম মন্তব্য করে বলেন, আল্লাহ আপনি আমাদের ক্ষমা করে দিন। এমন পরিস্থিতি দেখলে ভয়ে বুকটা কেঁপে ওঠে। সবাইকে হেফাজত নসিব করুন।

এসপি