কুষ্টিয়ায় প্রকাশ্যে শহিদুর রহমান নামে এক ঠিকাদারকে হাতুড়ি দিয়ে পেটানোর ঘটনায় তিনজনকে আটক করেছে র‌্যাব। মঙ্গলবার (০৩ আগস্ট) দুপুরে তাদেরকে আটক করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র‌্যাব কুষ্টিয়ার কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়ার্ডন লিডার মো. ইলিয়াস খান। এর আগে সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়া শহরের রাইফেল ক্লাবের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এতে গুরুতর আহত হয়েছেন ওই ঠিকাদার।  

আটকরা হলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা এলাকার হাতিয়া গ্রামের মোকাদ্দেস হোসেন, শহরের চৌড়হাসের আমিরুল ইসলাম বেল্টু ও পূর্ব মজমপুরের জহুরুল ইসলাম।

হামলার শিকার ঠিকাদার শহিদুর রহমান ওরফে মিন্টুর বাড়ি জেলার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের শানপুকুরিয়া গ্রামে।
এদিকে এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। 

কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল ইসলাম বলেন, হামলার ঘটনা এক দিন আগে ঘটলেও হামলার শিকার ওই ঠিকাদার অভিযোগ নিয়ে থানায় এসেছেন। মামলার প্রস্তুতি চলমান রয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আহত শহিদুর রহমান বলেন, আমি প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করি। কয়েক মাস আগে মিরপুর উপজেলায় সড়কের ৭ কোটি টাকার একটি টেন্ডার ছিল। আমি টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করি। টেন্ডারে অংশ নেওয়ার আগে থেকেই আমাকে হুমকি দেওয়া হয়। আমি যেন এ কাজে শিডিউল ক্রয় না করি।

তিনি আরও বলেন, এছাড়াও টেন্ডারে অংশ নেওয়ার জন্য ক্ষমতাসীন দলের কয়েকজন নেতা আমাকে হুমকি দিয়ে আসছিল। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ব্যাক্তিগত কাজে শহরে আসি। শহরের রাইফেল ক্লাব এলাকায় একটি দোকানে বসে চা পান করছিলাম। এ সময় হঠাৎ করেই ১০ থেকে ১৫ জন ব্যক্তি হাতুড়িসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাকে ঘিরে ধরে।

ওই ঠিকাদার বলেন, তাদের বেশির ভাগের হাতে হাতুড়ি ছিল। তারা ধরে আমার দুই পায়ের হাঁটুতে হাতুড়ি দিয়ে পেটাতে শুরু করে। এরপর আমি বাঁচতে দৌড় দেই। তারপরও আমাকে তারা তাড়া করে পেটাতে থাকে। সড়কসহ আশপাশে লোকজন থাকলেও তারা ভয়ে কেউ এগিয়ে আসতে সাহস পাইনি। আমার হাঁটু থেঁতলে গেছে। পিঠে ও বুকেও লেগেছে।

স্থানীয়রা জানায়, হামলাকারীরা বেশির ভাগই কুষ্টিয়া শহরের মজমপুর এলাকার বাসিন্দা। তারা স্থানীয় এক নেতার ক্যাডার বাহিনী। বেশির ভাগের মুখে মাস্ক পরা ছিল। ভয়ে কেউ তাদের বাধা দেয়নি। প্রথমে মামলা করতে অনাগ্রহ থাকলেও র‌্যাব অভয় দেওয়ায় মামলা করতে রাজি হয়েছেন হাতুড়িপেটার শিকার ঠিকাদার শহিদুর রহমান। 

জানা গেছে, এক আওয়ামী লীগ নেতার ইন্ধনে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। হামলাকারীদের ভয়ে তাৎক্ষণিক হাসপাতালে ভর্তি কিংবা থানায় অভিযোগ করতে সাহস পাননি হামলার শিকার ওই ঠিকাদার। প্রথমে মামলা করতে অনাগ্রহ থাকলেও র‌্যাব অভয় দেওয়ায় মামলা করতে রাজি হয়েছেন ঠিকাদার শহিদুর রহমান।

র‌্যাব কুষ্টিয়ার কোম্পানি কমান্ডার স্কোয়ার্ডন লিডার মো. ইলিয়াস খান বলেন, ঠিকাদারের ওপর হামলার ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুরে তিনজনকে আটক করা হয়। মামলা হওয়ার পর র‌্যাব হেড কোয়ার্টার থেকে সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত জানানো হবে।

রাজু আহমেদ/এমএসআর