পদ্মায় ফের ভাঙন, হুমকিতে শহর রক্ষা বাঁধ
রাজবাড়ীতে বর্ষা মৌসুমের শুরুতেই পদ্মা নদীর ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে কয়েক দিনে বিলীন হয়ে গেছে নদীর তীর রক্ষায় ব্যবহৃত হাজার হাজার সিসি ব্লকসহ ২০০-৩০০ মিটার এলাকা। এতে মারাত্মক ঝুঁকিতে রয়েছে রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধ।
রাজবাড়ী শহর থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে মিজানপুর ইউনিয়নের সোনাকান্দর এলাকায় শনিবার (০৭ আগস্ট) ভোর ৬টা থেকে ভাঙন শুরু হয়। এতে প্রায় ৪০ মিটার কংক্রিটের তৈরি সিসি ব্লক ধসে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
বিজ্ঞাপন
সরেজমিনে দেখা যায়, গোদারবাজার থেকে ২০০ গজ সামনে চর ধুঞ্চি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কাছে ৪০ মিটার এলাকার কংক্রিটের তৈরি সিসি ব্লক নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। পদ্মা নদীর শহর রক্ষা বাঁধের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলমান থাকা অবস্থায় এই ভাঙন শুরু হয়। এতে ওই এলাকার চর ধুঞ্চি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ একাধিক বসতভিটা হুমকির মধ্যে রয়েছে। এ ছাড়া ভাঙনে হুমকির মুখে পড়েছে রাজবাড়ী শহর রক্ষা বাঁধ। এ সময় জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধে সিসি ব্লক ও বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলার ব্যবস্থা করতে দেখা যায় পানি উন্নয়ন বোর্ডকে।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত ১৬ জুলাই (শুক্রবার) গোদার বাজার চরসিলিমপুর এলাকায় ২০ মিটার ও গত ২৭ জুলাই (মঙ্গলবার) গোদারবাজার এনজিএল ইটভাটার পাশে প্রায় ২০০ মিটার এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার দুই মাস না যেতেই তিনটি পয়েন্টে ব্লক ধসে যায়। পরে সিসি ব্লক ও জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভাঙন রোধে ২০১৮ সালের জুন মাসে রাজবাড়ী সদর উপজেলার বরাটে তিন ও মিজানপুরে দেড় কিলোমিটারসহ সাড়ে চার কিলোমিটার অংশের কাজ শুরু হয়। এরপর ২০১৯ সালের জুলাইয়ে (প্রথম সংশোধিত) শহর রক্ষা বাঁধের গোদার বাজার অংশের আড়াই কিলোমিটারের কাজ শুরু হয়। এতে মোট ব্যয় হয় ৪৫২ কোটি টাকা।
নদী তীরের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, শনিবার ভোর ৬টা থেকে হঠাৎ ভাঙন শুরু হয়। নদীর পাড়ে গিয়ে দেখি, শহর রক্ষা বাঁধের সিসি ব্লক দেবে মাটির পাড় ভাঙতে শুরু করেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই নদীর তীরে ৪০ মিটার এলাকা ভেঙে স্কুলের দিকে ঢুকে পড়েছে। এখানে একটি মসজিদ ও শতাধিক বাড়ি রয়েছে। এগুলো এখন হুমকির মুখে।
ধুঞ্চি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মাত্র ১০ মিটার দূরে নদীর অবস্থান। তাই স্কুল কর্তৃপক্ষ আতঙ্কিত হয়ে প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র সরিয়ে নিয়েছে।
ধুঞ্চি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দোলেনা সুলতানা জানান, বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ করে গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র ও মালামাল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে চেয়ার-টেবিল ও বেঞ্চ এখন সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে না।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আহাদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভোর ৬টার দিকে হঠাৎ ভাঙন শুরু হয়। ভাঙন নিয়ন্ত্রণ করতে জরুরি ভিত্তিতে বালু ভর্তি জিওব্যাগ এবং টিউব ব্যাগ ডাম্পিং করা হয়েছে। এখনো কাজ চলমান রয়েছে।
মীর সামসুজ্জামান/এসপি