৫ মামলায় ছেলে কারাগারে, খবর পেয়ে বাবার মৃত্যু
ঢাকার ধামরাইয়ের মাখুলিয়া গ্রামের সোহাগ হোসেনসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে প্রথমে একসঙ্গে পাঁচটি মামলা করা হয়। এরপর সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে নিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায় পুলিশ। ছেলে সোহাগকে কারাগারে পাঠানোর খবর পেয়ে তার বাবা আবুল কালাম (৫৭) স্ট্রোক করেন।
রোববার (০৮ আগস্ট) রাতে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়েছে। আবুল কালাম ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের মাখুলিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
বিজ্ঞাপন
এলাকাবাসী ও আবুল কালামের পরিবার সূত্রে জানা যায়, ছেলে সোহাগকে নিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করছিল আবুল কালামের পরিবার। সংসারের খরচ চালাতে কষ্ট হয় বলে কিছুদিন আগে স্থানীয় একটি আবাসন প্রকল্পে পার্টটাইম চাকরি নেয় সোহাগ। চাকরি পেয়ে সুদিন ফেরে তার পরিবারে। তবে সোহাগের এই চাকরিতে ঈর্ষান্বিত ছিলেন এলাকার বদরুল ওরফে খাস বদু, রমজান, সাইদুর, মনসুর, ভঞ্জন ও পলান গং। তারা জোড় করে ওই প্রকল্পের জমি ও বালু ব্যবসা দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে বাধা দেওয়ায় স্থানীয় প্রশাসনের কিছু কর্মকর্তার যোগসাজশে গত ৩ আগস্ট প্রকল্পের ৪ কর্মকর্তা ও ড্রেজারের ১৩ কর্মচারীর নামে একসঙ্গে পাঁচটি মামলা করেন তারা।
সেদিনই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয় আবুল কালামের ছেলে সোহাগসহ ১৪ জন। পরে বিকেলে ওইসব মামলায় সবাইকে কারাগারে পাঠানো হয়। এ খবর শুনে সোহাগের বাব আবুল কালাম স্ট্রোক করেন। তাকে সাভারের কেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রোববার অবস্থার অবনতি হলে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় কুল্লা ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. বাবুল বলেন, সোহাগ এলাকায় ভদ্র ছেলে হিসেবে পরিচিত। কোনোদিন তার নামে একটা জিডিও হয়নি। হঠাৎ করে কিছু অসাধু চক্রের দেওয়া পাঁচটি মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে তাদেরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় পুরো এলাকাবাসী বিস্মিত এবং হতবাক। সোহাগের বাবার মৃত্যুর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তারা।
ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কালীপদ জানান, ওই আবাসন প্রকল্পের বালু পানির সঙ্গে পার্শ্ববর্তী জমিতে গিয়ে পড়ে। পার্শ্ববর্তী জমিওয়ালারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবে এক রাতে ৫ মামলা ও আটকের ব্যাপারে কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন তিনি।
ধামরাই থানার পরিদর্শক আতিকুর রহমান জানান, গ্রামবাসী জানে সোহাগের বাবা গত আড়াই বছর ধরেই অসুস্থ। এটি তার স্বাভাবিক মৃত্য।
মাহিদুল মাহিদ/আরএআর