কাজিরহাট-আরিচা নৌরুটে বরাদ্দকৃত চারটি ফেরির দুটি চলছে শিমুলিয়া ঘাটে। ফেরি সংকটে এ রুটে যানবাহনকে পারাপারের জন্য ১০-১২ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ঘাটে পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে চার শতাধিক যানবাহন। 

রোববার (১৫ আগস্ট) সকাল ৮টায় পাবনার কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, লকডাউন শিথিল করায় মহাসড়কে বেড়েছে পরিবহন। সেইসঙ্গে ঘাটেও বেড়েছে যানবাহনের চাপ। চারটি ফেরির মধ্যে দুটি ফেরি নেওয়া হয়েছে মাওয়া ঘাটে। এতবড় রুটে মাত্র দুটি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার সম্ভব নয়। বিষয়টি স্থানীয় এমপি মহোদয়কে জানিয়েছি।

তিনি আরও বলেন, এই রুট এখন ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতু দিয়ে দীর্ঘ যানজটের কারণে পাবনাসহ উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোর মানুষ এ নদীপথকে বেছে নিয়েছেন। ফলে নৌপথে হঠাৎ যাত্রী এবং যানবাহনের চাপ বেড়ে গেছে। 

বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১৩ আগস্ট) ভোরে কর্তৃপক্ষের নির্দেশে কাজিরহাট ঘাট থেকে সুফিয়া কামাল ও বেগম রোকেয়া নামে দুটি ফেরি মাওয়া ঘাটে নেওয়া হয়। বর্তমানে গোলাম মওলা ও কপতি নামে দুটি ফেরি চলাচল করছে।

সরেজমিনে কাজিরহাট ফেরি ঘাট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও ফেরিতে উঠতে না পেরে দুর্ভোগে পড়েছেন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা। অনেকে গাড়ির মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। সময়মতো পণ্য ডেলিভারি দেওয়া নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে পরিবহন চালকরা। উৎকণ্ঠায় ব্যবসায়ী মহল। 

স্থানীয় যুবক শিপন মনিরুজ্জামান জানান, আমাদের এখানে ফেরি চালু হওয়াতে বিশাল স্বপ্ন দেখেছিলাম। অন্তত পাবনার মানুষজন অনায়াসে ঢাকা যেতে পারবে। এখন ঢাকা যাওয়া তো দূরের কথা, ফেরিঘাটই বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। চারটি ফেরির দুটি নিয়ে যাওয়াতে আমরা ঘাটের সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। শত শত গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। অনেকে একদিন এক রাত অপেক্ষা করেও ফেরি পার হতে পারছে না। 

তবে ঘাট কর্তৃপক্ষের দাবি, ঈদের পর লকডাউন শিথিল করায় কাজিরহাট-আরিচা ফেরিঘাটে মানুষকে ভোগান্তির শিকার হতে হয়নি। সবাই ঠিকমতো পারাপার হচ্ছেন। যানজটও ছিল না। ফেরি দুটি নিয়ে যাওয়ায় এমন যানজটসহ নানা সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।

কাজিরহাট ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক মাহাবুবুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, লকডাউন শিথিলের পর এই রুটে যানজটের দেখা মেলেনি। পরিবহনগুলো অনায়াসে পারাপার হয়েছে। হঠাৎ করে দুটি ফেরি নিয়ে যাওয়ায় এমন যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। চরম বেকায়দায় সময় পার করছি।

বিআইডব্লিউটিসির পাটুরিয়া-আরিচা অঞ্চলের উপমহাব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাওয়া ঘাটে বেশি স্রোত থাকায় এখান থেকে নতুন ফেরি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুত আগের স্থানে ফেরি চলে আসবে। 

রাকিব হাসনাত/এসপি