সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্রগুলো কবে খুলবে?
দীর্ঘ সাড়ে চার মাস পর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চালু হয়েছে দেশের পর্যটন গুলো। কিন্তু সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্রগুলো এখনও খোলা হয়নি। কবে নাগাদ সেগুলো খুলবে, সে বিষয়েও কোনো নির্দেশনা নেই। তবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে মাছ ও কাঁকড়া শিকারে জেলেরা সুন্দরবনে প্রবেশ করতে পারবেন।
পর্যটনকেন্দ্রগুলো খুলে দিলেও এর সঙ্গে শর্ত জুড়ে দিয়েছে সরকার। রিসোর্ট, কমিউনিটি সেন্টার ও বিনোদনকেন্দ্র আসন সংখ্যার শতকরা ৫০ ভাগ ব্যবহার করে চালু করতে পারবে। সব ক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে। মানতে হবে স্বাস্থ্য অধিদফতর প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি। ১২ আগস্ট মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
বিজ্ঞাপন
ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব সুন্দরবনের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আযম ডেভিড বলেন, সুন্দরবনের পর্যটনকেন্দ্র খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। সেপ্টেম্বরে এ বিষয়ে জানা যাবে।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের কারণে ২০২০ সালের মার্চ থেকে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্রগুলো বন্ধ রয়েছে। এর মাঝে অবশ্য কয়েক মাস খোলা ছিল। চলতি বছরের এপ্রিলে তা আবারও বন্ধ হয়ে যায়। সংগঠনের তালিকাভুক্ত ৬৩টি ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ ছাড়াও বিচ্ছিন্নভাবে আরও কিছু প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সব মিলিয়ে শতাধিক প্রতিষ্ঠান হবে। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাই দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছেন। অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মী কমিয়েছে। অনেকেই বেকার হয়েছেন।
সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সুন্দরবনে সব প্রকার মৎস্য ও কাঁকড়া শিকার বন্ধ রাখার ঘোষণা রয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে মৎস্য ও কাকড়া শিকারের জন্য জেলেদের পাস দেওয়া হবে। কিন্তু পর্যটনকেন্দ্র খোলার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের কোনো নির্দেশনা আসেনি।
খুলনা আঞ্চলিক বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো বলেন, সুন্দরবনের পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ হয়েছিল পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায়। কিন্তু সুন্দরবনের পর্যটনকেন্দ্র খোলার বিষয়ে মন্ত্রণালয় থেকে কোনো নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা সাপেক্ষে সুন্দরবনের পর্যটন কেন্দ্র খুলে দেওয়া হবে।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে গত বছর ১৯ মার্চ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ৭ মাস সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশ বন্ধ ছিল। পরবর্তীতে খুলে দেওয়া হয়। ফের করোনাভাইরাসের সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে চলতি বছরের ৩ এপ্রিল থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত বিশ্বের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে বনবিভাগ। করোনা সংক্রমণ রোধে তা বাড়ানো হয়, যা এখন পর্যন্ত কার্যকর রয়েছে।
এদিকে, আজ থেকে বিনোদন কেন্দ্রগুলো খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও খোলেনি খুলনা মহানগরীর পার্কগুলো। এতে বিপাকে পড়েছে স্বাস্থ্য সচেতন নাগরিক এবং ঘরবন্দি শিশুরা। খুলনা সিটি করপোরেশনের আওতায় রয়েছে হাদিস পার্ক, জাতিসংঘ শিশু পার্ক, সোলার পার্ক, গোলকমনি পার্ক, নিরালা পার্ক, লিনিয়ার পার্ক ও খালিশপুর ওয়ান্ডারল্যান্ড শিশু পার্ক। ২০২০ সালের ১৯ মার্চ থেকে নগরীর সাতটি পার্কে জনসমাগম নিষিদ্ধ করে নগর সংস্থা। সেই থেকে পার্কগুলো বন্ধ রয়েছে। খুলনা নগরবাসী পার্কগুলো খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
মোহাম্মদ মিলন/আরএইচ