ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই। নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন নদীপাড়ের বাসিন্দা ও গো-খামারিরা।

রোববার (২২ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টের আব্দুল লতিফ ও কাজীপুর মেঘাই ঘাট পয়েন্টের ওমর ফারুক ঢাকা পোস্টকে জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি শহর রক্ষা বাঁধ পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ছয় সেন্টিমিটার ও কাজীপুরে ১৩ সেন্টিমিটার বেড়ে চার সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

১৪ আগস্ট থেকে শুরু করে রোববার (২২ আগস্ট) পর্যন্ত যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এ সকল এলাকার বসতবাড়ি ও রাস্তাঘাটে পানি উঠায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয়রা। বিস্তীর্ণ ফসলি জমি তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হচ্ছে রোপা আমন খেত, বীজতলা, আখ, পাট, তিল ও সবজি বাগানসহ বিভিন্ন ফসল।

এদিকে পানি বাড়ায় তলিয়ে গেছে শাহজাদপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ গো-চারণভূমি ও সবুজ ঘাস। ফলে দুই লক্ষাধিক গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গো-খামারিরা। বাড়িতে গাদাগাদি করে রাখা হচ্ছে গবাদি পশু। এতে নানান রোগ দেখা দিচ্ছে বলেও জানা গেছে।

জেলার কাজীপুর উপজেলার চরাঞ্চলের নাটুয়ারপাড়া, নিশ্চিন্তপুর, চরগিরিশ, তেকানি, মুনসুরনগর ও খাসরাজবাড়ি ইউনিয়ন এবং চৌহালী উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শুরু হওয়া ভাঙনে নদীতে বিলীন হয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ও বসতভিটা। নদীর পাড় থেকে ঘড়-বাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন ভাঙন কবলিতরা।

এলাকার বর্ণনা দিতে গিয়ে নিশ্চিন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই ইউনিয়নের ডিক্রীদোরতা গ্রাম ও জিআরডিপি নৌকাঘাট পয়েন্টে ব্যাপক আকারে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে এলাকাবাসী। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি বাড়ি-ঘর সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বিলীন হচ্ছে আবাদি জমি ও বৈদ্যুতিক খুঁটি।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী জাকির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, যমুনা নদীর পানি আরও দু-একদিন বাড়তে পারে। এ সময়ের মধ্যে বিপৎসীমা অতিক্রমও করতে পারে।

সিরাজগঞ্জ জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম ঢাকা পোস্টকে জানান, যমুনা নদীতে পানি বাড়লেও তা বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আমরা প্রতিনিয়ত খোঁজ-খবর রাখছি। আমাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ আছে। প্রয়োজন অনুযায়ী সেগুলো বিতরণ করা হবে। 

শুভ কুমার ঘোষ/এসপি