আরিফ বিল্লাহ

বাবা-মায়ের স্বপ্ন ছিল আরিফ বিল্লাহ চিকিৎসক হয়ে সাধারণ মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেবে। সেই স্বপ্ন পূরণের পথে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের এই তরুণ। কিন্তু আরিফের চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন অপূর্ণই রয়ে গেল। 

গতকাল শুক্রবার (২৭) আগস্ট বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার পত্তন ইউনিয়নের লইসকা বিলে ট্রলারডুবিতে আরিফসহ ২২ জনের মৃত্যু হয়েছে।

সৌদি আরব প্রবাসী জহিরুল হক ভূইয়ার দুই সন্তানের মধ্যে আরিফ ছিলেন বড়। আরিফের ছোট ভাই ফয়সাল বিল্লাহ (১২) গ্রামের একটি মাদরাসায় পড়াশোনা করে। চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন থেকে দুই মাস আগে ঢাকার গ্রীন লাইফ মেডিকেল কলেজে ভর্তি হন আরিফ।

শনিবার (২৮ আগস্ট) আরিফের বাড়িতে গিয়ে স্বজনদের কান্না আর আহাজারি দেখা গেছে। আরিফের বাবার সঙ্গে তার মা পারভীন বেগমও বর্তমানে সৌদি আরব আছেন। ছেলের মৃত্যুর খবরে সৌদি আরব থেকে দেশের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন তারা। আরিফের মরদেহ ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হয়েছে। শনিবার রাত ১২টা নাগাদ তার বাবা-মা সৌদি আরব থেকে বাড়িতে এসে পৌঁছার কথা রয়েছে। এরপর আগামীকাল রোববার (২৯ আগস্ট) বাড়ির পাশে কবরস্থানে চিরনিদ্রায় শায়িত হবেন আরিফ।

আরিফের চাচা বোরহান ভুইয়া বলেন, আরিফ ছোটবেলা থেকেই মেধাবী ছিল। স্কুল-কলেজের সকল পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে সে। গতকাল এক বন্ধুর কিছু কাগজপত্র নিয়ে জেলা শহরে যাচ্ছিল আরিফ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বাড়ি ফিরল লাশ হয়ে। তার এমন অকাল মৃত্যুতে সবার স্বপ্ন চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে গেছে।

আরিফের আরেক চাচা ওমর ফারুক ভুইয়া বলেন, কুমিল্লার ইস্পাহানি পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে ২০১৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে উত্তীর্ণ হয় আরিফ। এরপর সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির চান্স পায়। কিন্তু বাবা-মায়ের চিকিৎসক বানানোর স্বপ্ন পূরণের জন্য সেখানে ভর্তি না হয়ে মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয় আরিফ।

আজিজুল সঞ্চয়/আরএআর