দিনাজপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর অধীন চিরিরবন্দর জোনাল অফিসের সফটওয়্যার নষ্ট থাকায় ভুয়া বিল নিয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন এর অধীনে থাকা অর্ধলক্ষ গ্রাহক। বিল পরিশোধ করার পরও বিলের সঙ্গে আগের কয়েক মাসের বকেয়া বিল জুড়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ গ্রাহকদের।

সরেজমিনে জানা যায়, চিরিরবন্দর উপজেলায় পল্লী বিদ্যুতের ৫৪ হাজার গ্রাহক। তাদের অধিকাংশই গ্রামের সাধারণ, কৃষক ও খেটে খাওয়া মানুষ। বাড়িতে রাতের বেলায় ২-৪টি লাইট, একটি টিভি অথবা কয়েকটি ফ্যান চলে। এসি কিংবা ফ্রিজসহ অত্যাধুনিক ইলেকট্রনিকস যন্ত্রপাতিও নেই। সাধারণত তাদের মাসিক বিদ্যুৎ বিল ৩০০ থেতে ৫০০ টাকা হয়। কিন্তু দুই থেকে তিন হাজার টাকা পর্যন্ত বকেয়া বিল ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। অনেকে না বুঝে আবার সেই টাকা পরিশোধও করেছেন।

উপজেলার আব্দুলপুর ইউনিয়নের ফলিমারিডাঙ্গা গ্রামের গ্রাহক আনিসুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের গ্রামের অনেকের বিলের সঙ্গে আগের পরিশোধ করা বিল বকেয়া হিসেবে যোগ করে পুনরায় বিল দেওয়া হয়েছে। আমরা পল্লী বিদ্যুতের অফিসে যোগাযোগ করেও এর সমাধান পাচ্ছি না।

উপজেলার পুনট্টি গ্রামের আবু তালেব মন্ডলের ছেলে মনির ইসলাম বলেন, আমার আগের বিল পরিশোধ করার পর সেই বিল আবার বকেয়া হিসেবে দেখানোয় আমি পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে অভিযোগ করার জন্য গিয়েছিলাম। সেখানে আমাকে বলা হয়, আগের পরিশোধ করা বিলের কপি দেখাতে হবে। না হলে বকেয়াসহ পুরো বিলটিই পরিশোধ করতে হবে। কিন্তু আমার আগের বিলের কাগজ কোথায় আছে খুঁজে না পাওয়ায় আমার বিলটি সংশোধন করতে পারিনি।

উপজেলার পূর্ব সাইতাড়া গ্রামের পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহক নাজমুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, বকেয়া বিল পরিশোধ করার পরও চলতি মাসের বিলে গত মার্চের বিল বকেয়া হিসেবে যোগ করে দেওয়া হয়েছে। এ যেন ভুতুড়ে কারবার।

পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যুৎ বিল তৈরি করার জন্য সংশ্লিষ্ট রুমে ভিড় করছেন গ্রাহকরা। সবাই একই সমস্যার সম্মুখীন। তাই অভিযোগ নিয়ে এসেছেন।

এ বিষয়ে চিরিরবন্দর পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের এজিএম ইসরাত সুলতানা ঢাকা পোস্টকে বলেন, মাঝখানে আমাদের সফটওয়্যারে কিছু সমস্যা হয়েছিল, সে জন্য আমরা বকেয়া বিলগুলো প্রিন্ট করতে পারছিলাম না। আমাদের গ্রাহকদের মধ্যে যারা বিকাশে বা টেলিটকে বিল পরিশোধ করেছেন, তাদেরগুলোতেও একটু সমস্যা আছে।

তিনি বলেন, যারা অফিসে অভিযোগ নিয়ে আসছেন, তাদের সমাধান করে দেওয়া হচ্ছে। সফটওয়্যার মেরামত করা হয়েছে এবং সামনের মাস থেকে এ সমস্যা থাকবে না বলেও জানান তিনি।

এনএ