নর্দান ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) রাজশাহীর সদরদফতরে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) দুদকের রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের তিন সদস্যের একটি দল এ অভিযান চালায়।

ওই দলের নেতৃত্ব দেন দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আল-আমিন। দলে ছিলেন সংস্থার উপ-সহকারী পরিচালক সদীপ কুমার চৌধুরী ও সহকারী পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান।

নেসকো ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাকিউল ইসলামসহ বেশকিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দের কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে, ঠিকাদারের সঙ্গে যোগসাজশে বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ না করে বিল উত্তোলনে জড়িত রয়েছেন তারা। এছাড়া ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে সরকারি অর্থ লুটপাট ও কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনেরও অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। বেশকিছু অভিযোগের প্রমাণও পেয়েছে দুদক।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, সরেজমিনে পরিদর্শনকালে দুদকের দলটি নির্বাহী পরিচালক আব্দুল আজিজ ও অপর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ গোলাম আহম্মেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। এ সময় গত ১৮-১৯ অর্থবছরে লাইট লাগানো ছাড়া অন্যান্য কাজের টেন্ডার সংক্রান্ত সব রেকর্ড-পত্র তাৎক্ষণাৎ সরবরাহ করতে পারেনি।

পরে গত ১৮-১৯ অর্থবছরে লাইট লাগানো টেন্ডার সংক্রান্ত সব রেকর্ড-পত্রের ফটোকপি, অফিসের ডিজিটাল হাজিরার রেকর্ড, এমডির গত ১৪ মাসের টিএ/ডিএ সংক্রান্ত বিলের সব রেকর্ড-পত্রের ফটোকপি, ঢাকা লিয়াজোঁ অফিস ও রেস্ট হাউজের ভাড়াসহ গত এক বছরের তথ্য, ২০২০ সালের ১ম ও ২য় শ্রেণির পদে নিয়োগ সংক্রান্ত সব রেকর্ড-পত্রের ফটোকপি, নেসকো রাজশাহীর মোট গ্রাহক সংখ্যা ও বকেয়া বিলের গত এক বছরের তথ্য, ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রকল্পগুলোর তালিকা ও বাস্তবায়ন সংক্রান্ত সব রেকর্ড-পত্রের ফটোকপিসহ অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের ২০১৯-২০ অর্থবছরে টিএ/ডিএ বিলের হিসাব সংক্রান্ত তথ্য চেয়েছে দুদকের দলটি। ২ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এসব নথিপত্র দুদক কার্যালয়ে জমা দিতে সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

দুদক সূত্র আরও জানিয়েছে, নেসকো এমডি জাকিউল ইসলামসহ নির্বাহী পরিচালক আব্দুল আজিজ, সৈয়দ গোলাম আহম্মেদ, ডিসিএস সৈয়দ আবু তাহের, নির্বাহী পরিচালক সুব্রত কুমার দাস ও শরিফুল আওলাদ, ব্যবস্থাপক আবু মোতালেব ডিজিএম দেলোয়ার হোসেন, উচ্চমান হিসাব সহকারী নজরুল ইসলাম ও শহীদুল ইসলামসহ তাদের স্ত্রীদের আয়কর নথি তলব করা হয়েছে। আগামী ৯ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এসব নথি দুদক কার্যালয়ে জমা দিতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে তাদের গাড়ি এবং বাড়ি ও ফ্ল্যাট সংক্রান্ত তথ্যে দিতে বিআরটিএ এবং আরডিএকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় দিয়েছে দুদক।

এদিকে দুদক এনফোর্সমেন্ট টিম জানিয়েছে, তারা যেসব নথিপত্র চেয়েছে সেগুলো প্রাপ্তি সাপেক্ষে পর্যালোচনা করে বিস্তারিত প্রতিবেদন আকারে পরবর্তীতে কমিশনে জমা দেবে।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এসএসএইচ